দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

বটিয়াঘাটায় নদী-খাল ইজারা বন্ধ করে উন্মুক্ত জলাশয় ঘোষণার দাবীতে স্বারকলিপি প্রদান

43

বটিয়াঘাটা উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত আমতলা, খড়িয়া, বটবুনিয়া, বরাখালী, ছোটখড়িয়া, মরাখড়িয়া ও গোন্ধামারী খালের ইজারা বন্ধ করে উন্মুক্ত জলাশয় হিসাবে ঘোষণায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্বারক লিপি প্রদান করেছেন লোকজ ও মৈত্রী কৃষক ফেডারেশন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসনে আরা তান্নী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করে দাবীগুলো তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মৈত্রী কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক বিভাষ মণ্ডল, লোকজ-এর নির্বাহী পরিচালক দেবপ্রসাদ সরকার, সমন্বয়কারী পলাশ দাশ, মৌফারসের আলম লেনিন, মিলন কান্তি মণ্ডল ও অমরী মণ্ডল প্রমুখ:।

নেতৃবৃন্দ স্বারকলিপিতে উল্লেখ করেন, উল্লেখিত নদী ও খালসমূহ পরস্পর সংযুক্ত, কিন্তু ভিন্ন নামে পরিচিত জলমহল। যা ওয়াপদা বেঁড়িবাধ-এর ভিতরে অবস্থিত এবং স্লুইস গেইট সংযুক্ত। উক্ত নদী খালগুলির মাধ্যমে অত্র এলাকার ২৬টি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার একর ফসলী জমির পানি নিষ্কাষিত হয়। এই এলাকার ৩৫ হাজার অধিবাসীদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ কৃষিজীবি ও মৎস্যজীবি। এই নদী ও খালের পানি ব্যবহার করে আমন, আউস ও ব্যাপক বোরো ধান, তরমুজ, কুমড়া, তিল, মুগডালসহ সকল ফসল উৎপন্ন হয়। সারাদিন কাজের পর কৃষকরা এই নদী হতে মাছ ধরে তাদের দৈনন্দিন আমিষের চাহিদা পুরন করে। এই এলাকার মানুষের জীবন জীবিকার জন্য এই নদী ও খালগুলি একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠেছে।

অথচ উক্ত উন্মুক্ত জলাশয়গুলোকে বদ্ধ দেখিয়ে ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল নবম পরিচ্ছেদ-এর ১৮৭, ১৮৮ অনুচ্ছেদ, বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রনালয়ের ২৭ আগস্ট ২০১৪ সালে প্রকাশিত গেজেট জাতীয় চিংড়ি নীতিমালা-২০১৪ এর ৫.২.৪ ও ৫.২.৫ ধারা, জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকারের উপানুষ্ঠানিক পত্র নং: বাজাস/স্পীকার/১(১)/ভূঃমঃ/০৯/২১৮, জলমহল নীতিমালা ২০০৯ এর ১৫ ধারার ‘ঘ’ উপধারা এবং বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিবেদন পত্র বিবেচনা না করে ইজারা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

জলমহলগুলোর মধ্যে আমতলা ও খড়িয়া নদী দুটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অসাধু কর্মচারিদের সাথে স্থানীয় ভূয়া মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতির যোগসাজসে ইজারা প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। গত ০২ এপিল ২০২৩ তারিখ ডিসি অফিস থেকে আমতলা নদীটিকে (আয়তন: ৬০ একর) বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে একমাত্র দর প্রস্তাবকারী গঙ্গারামপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: নামের একটি ভূয়া সমিতিকে  ৬ বছরের জন্য বছরে মাত্র ১১০,০০০.০০ (এক লক্ষ দশ হাজার) টাকায় ইজারা প্রদান করা হয়েছে।

তাছাড়া কিছুদিন পূর্বে ২২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে আপনার দপ্তর হতে ইজারা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বটবুনিয়া, বরাখালী, ছোটখড়িয়া, মরাখড়িয়া ও গোন্ধামারীসহ প্রবাহমান বেশকিছু খাল ইজারা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অথচ আমতলা নদী নামের শুধুমাত্র একটি মাত্র প্রবাহিত (স্লুইস গেট দিয়ে পানি ওঠানো নামানো হয়) জলাশয়ের পানির সাহায্যে এলাকার হাজার-হাজার মানুষ কোটি-কোটি টাকার তরমুজসহ কৃষি উৎপাদন ও মৎস্য আহরণ করে তাদের জীবন-জীবিকা অতিবাহিত করে।

উল্লেখিত পরিস্থিতিতে আমতলা, খড়িয়া, বটবুনিয়া, বরাখালী, ছোটখড়িয়া, মরাখড়িয়া ও গোন্ধামারী খালের ইজারা বন্ধ এবং নেট পাটা ও বাধ অপসারন করে উন্মুক্ত জলাশয় হিসাবে ঘোষণার দাবী জানিয়ে এই স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। বটিয়াঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসনে আরা তান্নী এ বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.