যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপ নীতির প্রভাব মোকাবিলায় এবার সরাসরি পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ। দেশটির প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা নিজেই। শনিবার রাতে এক ব্রিফিংয়ে এমনটাই জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে আয়োজিত ওই ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ওপরে আরোপিত শুল্ক এবং আমাদের বাণিজ্যের ধরন ও গঠন বিশ্লেষণ করে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা একমত হয়েছি যে, তিনিই সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।”
এর আগে যমুনায় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির প্রভাব ও করণীয় নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাণিজ্য উপদেষ্টা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “আমাদের পণ্য রপ্তানি মূলত তৈরি পোশাক নির্ভর। এতে যুক্তরাষ্ট্রের যে নতুন শুল্ক আরোপ হয়েছে, তার প্রভাব পড়তে পারে আমাদের রপ্তানিতে। তাই বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে জানাবেন যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান কতটা এই খাতের ওপর নির্ভরশীল এবং বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় এই ধরনের শুল্ক আমাদের জন্য কতটা চাপ তৈরি করতে পারে।”
সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হয়তো শুল্কে অব্যাহতি কিংবা কিছুটা ছাড় চেয়ে অনুরোধ জানাবে। বিশেষ করে যেসব খাতে বাংলাদেশ বেশি নির্ভরশীল, সেসব খাতে শুল্ক আরোপের প্রভাব যেন সীমিত রাখা হয়—এমনটাই আশা করছে ঢাকা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন শুল্কনীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্যই বড় ধাক্কা হতে পারে। ফলে বিষয়টি শুধু দ্বিপাক্ষিক নয়, একটি বৃহত্তর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বাস্তবতার অংশ।
বাংলাদেশের এই সরাসরি কূটনৈতিক উদ্যোগ তাই শুধু তাৎক্ষণিক চাপ সামলানোর নয়, বরং ভবিষ্যতের বাণিজ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকেও একটি বড় পদক্ষেপ। এখন দেখার বিষয়—ওয়াশিংটনে এই বার্তা কতটা গুরুত্ব পায়।