২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে একটি মামলা এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করেছে ঢাকার চকবাজার থানা পুলিশ। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি গত ৪ মার্চ আদালতের নির্দেশে এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
মামলার বাদী হচ্ছেন ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার বিডিআরের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুর রহিমের ছেলে অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ। তিনি গত ২৫ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ২০১০ সালের অপমৃত্যুর মামলা রিকল করে নতুন করে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আব্দুর রহিমকে বিভিন্ন লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ২০১০ সালের ২৯ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। মৃত্যুর পর ডাক্তাররা তাকে স্ট্রোকে মারা গেছেন বলে সার্টিফিকেট দেন।
মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিডিআর বিদ্রোহের মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল, সাবেক কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক এমপি নূরে আলম চৌধুরী লিটন, শেখ সেলিম, শেখ হেলাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাবেক এমপি মির্জা আজম এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ মোট ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
চকবাজার থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক আশরাফুল আলম মামলাটি নিশ্চিত করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে আগামী ১০ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বর্তমান সরকারের সময় এটিই প্রথম মামলা। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, স্বৈরশাসক হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে বিদেশি এজেন্টদের সহায়তায় সেনাবাহিনী ও বিডিআরের মেধাবী অফিসারদের হত্যা করে। এই মামলার মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের আশা করছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।