ভদ্রা নদীর উপছে পড়া পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে কেশবপুর
তালা উপজেলার অর্ধশত গ্রাম ।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস বন্ধ হয়ে গেছে
এম এম জামান মনি পাটকেলঘাটা থেকে :যশোর জেলার ভদ্রা নদীর উজানে ও উপছে পড়া পানিতে কেশবপুর ও তালা উপজেলার ৫০ গ্রামের প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবতার জীবনযাপন করছে।
সরজমিনে গত ২৮ আগস্ট ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ গ্রামের প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ ২ সপ্তাহের বেশি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে । শুভাশুনি টু শিরাশুনি সেতু বাজার হিজলডাঙ্গা হয়ে কেশবপুরের বাওশুলা ,পচচক করা ঢ্যামশা খোলা বিদ্যানন্দকাটি মঙ্গলকোট ,বালিয়াডাঙ্গা , ১৮ মাইল, তালার বিভিন্ন গ্রাম রাস্তায় কোথাও হাটু বা তার চেয় বেশি পানির নিচে। গত ১৫ দিন ধরে তলিয়ে রয়েছে। বাড়ি ঘরে উঠানে মশা, সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে ।সেই সাথে বেড়েছে পানি বাহিত রোগ।
স্থানীয়রা জানান, বিগত ৩-৪ দিন,র চেয়ে প্লাবিত এলাকায় পানি বেড়ে গিয়ে আরো অবনতি হয়েছে। কৃষকদের সবজির ক্ষেত ও আমন ধান গ্রামকে গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
মৎস্য চাষিরা মারাত্নক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে হাজার হাজার বিঘা ঘের প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে। হিজলডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সোবহান মোড়লের পুত্র মৎস্য চাষী আলামিন কান্না জনিত কন্ঠে বলেন। জোয়ারের পানির ঢল এসে আমার ৩০০ বিঘা ঘের পানিতে ভেসে গেছে। আমি এখন কি করবো বিভিন্ন এনজিও ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা লোন নিয়ে ঘেরে আমার চারা মাছ ছাড়া ছিল ২৪ লাখ টাকার আর খাদ্যসহ আনুষাঙ্গিক আরো ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমি কি করবো ভেবে কুল পাচ্ছি না। এত টাকা ঋণ আমি এখন কিভাবে শোধ করবো। পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় যাব কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।
হিজলডাঙ্গা গ্রামের আরেক ব্যক্তি মশিউর রহমান জানান, এই মুহূর্তে একজন মারা গেলে ভাসিয়ে দেওয়া ছাড়া মাটি দেওয়ার কোন জায়গা নেই।
শিরাশুনি গ্রামের শহিদুল ইসলাম ড্রাইভার জানান,শিরাশুনী গ্রাম ও জনগণের চলাচলের রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকদের কাঁচা ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। লাউতারা সুভাষোনি কাকুড় পাড়া গ্রাম সহ বিলে পাট লাগানো ছিল। পানিতে বিল ডুবে থাকায় কৃষকরা পাট কাটতে পারিনি। কৃষকের আউশ-আমন ধান পানির তলে ডুবে গেছে।এই অঞ্চল প্রতি বছর ৬ মাস পানিতে ডুবে থাকে দেখার কেউ নেই।
কৃষি অফিসার হাজিরা খাতুন এর নিকট কৃষকের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও তাদের পুনঃবাসনের লক্ষ্যে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য সরকারের নিকট প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছেন কিনা জানতে চাইলে,তিনি জরুরী মিটিং রয়েছেন মর্মে জানান।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপা রানী সরকারের এর নিকট সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন তেঁতুলিয়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহন ও পানি নিষ্কাশনের বিষেয় দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি জানান,তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে কচুরিপনা অপসারণের কার্যক্রম চলছে।
দীপা রানী সরকার প্রতিবেদককে জানিয়েছে ইতিমধ্যে সেরা শনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শোভা সনি দাখিল মাদ্রাসা ক্লাস বন্ধ হয়ে গেছে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধির কারণেই কোমলমতি এবং শিশু বাচ্চাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করাটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে তিনি মনে করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন । নির্বাহী অফিসার আরো জানিয়েছে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় খাল এবং নদী খনন করার জন্য সরজমিন পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মহোদয় কে তিনি জানিয়েছেন এবং তার ব্যবস্থা নেয়া হবে এমনটা জানিয়েছেন ।তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে কয়েকবার তিনি সরেজমিনের পরিদর্শন করেছেন। মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় শিরাশুনী এলাকা পরিদর্শন করেন বলে জানিয়েছেন।