দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

পাকিস্তানের পাশে চীন: উত্তপ্ত উপমহাদেশে বেইজিংয়ের কৌশলগত বার্তা

37

উত্তাল উপমহাদেশ, সীমান্তে গোলাগুলির গন্ধ, পেছনে রক্তাক্ত সংঘর্ষ—ঠিক এমন মুহূর্তেই চীন জানিয়ে দিল, তারা পাকিস্তানের পাশে আছে। ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা’র প্রশ্নে বেইজিংয়ের সমর্থন এখন আগের চেয়েও দৃঢ়তর।

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এই বার্তা দেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এএফপি ও পাকিস্তানের ডন–এর খবরে উঠে এসেছে এই কূটনৈতিক মোড় ঘোরানো বক্তব্য।

ওয়াং ই স্পষ্ট বলেন, “পাকিস্তান হচ্ছে চীনের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য, অটুট ও পরীক্ষিত বন্ধু। আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যেও আমরা ইসলামাবাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল থাকবো।” ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনার আবহেই চীনের এমন ঘোষণাকে বিশ্লেষকরা দেখছেন এক সুস্পষ্ট কৌশলগত বার্তা হিসেবে।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কেবল সিপিইসি প্রকল্প বা অর্থনৈতিক করিডোর নিয়েই নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভাঙা-গড়া রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথনকশা নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আঞ্চলিক শান্তি ও উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই দেশের নেতৃত্ব।

ইসহাক দার এ সময় চীনকে ধন্যবাদ জানান পাকিস্তানের অখণ্ডতার প্রশ্নে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার জন্য। শুধু তাই নয়, তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (CPC) আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও–এর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। আলোচনায় উঠে এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পার্টির সম্পর্ক আরও মজবুত করার পরিকল্পনা।

লিউ বলেছেন, “চীন সব সময় পাকিস্তানকে দেখে কৌশলগত সহযোগী হিসেবে—যে বন্ধুত্ব সব পরিস্থিতিতে টিকে থাকে, আরও শক্ত হয়।”

এই সফর এমন সময় হচ্ছে, যখন কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে একাধিক সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। পেহেলগাম হামলার রেশ এখনো মুছে যায়নি। ঠিক এই পটভূমিতে বেইজিংয়ে বসে ইসলামাবাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে চীন—এ যেন শুধু বন্ধুত্বের বার্তা নয়, বরং এক সাবধানবাণীও।

বিশ্বব্যাপী নতুন করে গঠিত হচ্ছে শক্তির অক্ষরেখা। চীনের এই বার্তা যেন বলছে, যে হাত ধরে আছে পাকিস্তানের পতাকা, তার ছায়ায় এখন লাল রঙের তারা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.