খুলনার দাকোপ উপজেলায় লাউডোব খালের উপর আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ ব্রীজের মাত্র দুইটি পিলার নির্মাণ করে টিকাদার লাপাত্তা। নির্ধারিত বর্ধিত সময়ের ৩ বছরের বেশি অতি বাহিত হয়েছে। ফলে খালটি পারাপারের চরম ভোগান্তি হচ্ছে বলে স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ। বিশেষ করে ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে যেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বানিশান্তা ও লাউডোব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাউডোব খালের উপর ব্রীজ নির্মানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে মোতাবেক ব্রীজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ৩৩০ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি এ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার।
২০২০-২১ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন (কেবিএসআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় বানিশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজার সড়কে ১+৩০০ কিলো মিটার চেইনেজে উক্ত খালের উপর ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য আরসিসি গার্ডার ব্রীজটি নির্মান কাজের দায়িত্ব পায় মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড। ব্রীজটি নির্মান ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ব্রীজটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ব্রীজটি নির্মান কাজ শুরু করেন ২১ সালের ২০ এপ্রিল। কিন্তু ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ ব্রীজের মাত্র দুইটি পিলার নির্মাণ করে টিকাদার লাপাত্তা। ব্রীজটির নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা ২২ সালের ১৯ অক্টোবর। পরবর্তীতে টিকাদার প্রতিষ্ঠান বর্ধিত সময়ে নেয় ২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত বর্ধিত সময়সহ এ পর্যন্ত ৩ বছরের বেশি অতি বাহিত হলেও ব্রীজটি নির্মানে এলইজিডি কর্তৃপক্ষের নেই কোন উদ্যোগ। ফলে খালটি পারাপারের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীসহ স্থানীয় জনসাধারণের।
লাউডোব বানিশান্তা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার সরকার ও লাউডোব বানিশান্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেব নারায়ন চক্রবর্তী বলেন, দুইটি বিদ্যালয় সংলগ্ন বানিশান্তা ও লাউডোব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাউডোব খালের উপর ব্রীজ নির্মান হচ্ছে। কিন্তু ব্রীজটির নির্মান কাজ দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ রয়েছে। এতে ২টি বিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, বয়ো-বৃদ্ধা নারী-পুরুষ ও খালের উভয় পাড়ের বাসিন্দাসহ এলাকাবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক পথ ঘুরে ছাত্র ছাত্রীরা পারাপার হয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করছে। এ ছাড়া মালামাল বহনেও এলাকার লোকজনের বাড়তি ভ্যান খরচ গুনতে হচ্ছে। ব্রীজটি দ্রুত নির্মান হলে ছাত্র ছাত্রীসহ এলাকার লোকজনের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে তারা মনে করেন।
এবিষয়ে লাউডোব ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নিহার মন্ডল জানান, বানিশান্তা ও লাউডোব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাউডোব খালের উপর ব্রীজটি নির্মান কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে ২টি বিদ্যালয়ের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, বয়ো-বৃদ্ধা নারী-পুরুষ ও খালের উভয় পাড়ের বাসিন্দাসহ এলাকাবাসীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে কাজ বন্ধ না রেখে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে একাধিক বার আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু আজও পর্যন্ত কোন প্রতিকার হয়নি।
এবিষয়ে জানার জন্য ঠিকাদার নাসিম আকনের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোনটি রিসিব করেননি।
এব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ লাউডোব খালের উপর আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মান কাজ বন্ধ থাকায় আমরা ঠিকাদারের সাথে চুক্তিপত্র বাতিলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।