দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

দাকোপে ভয়াবহ নদী ভাঙনে হরিয়ে যাচ্ছে ভিটেমাটি

77

খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার মন্দিরের সামনে আবারও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, ক্ষেত-খামার। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হরিচরণ মণ্ডল, যিনি জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে চতুর্থবারের মতো ভিটেমাটি হারাতে বসেছেন।

“আমার এই বাড়িটা চারবার সরিয়েছি। একবার করে নদী ভাঙে আর আমার বাড়ির উপর দিয়ে রাস্তা হয়। তখন ঘর-বাড়ি ভেঙে সরতে থাকি। এবার আর কোনো জায়গা নেই। জমিও নেই। এবার যদি ভাঙে, ভেড়ির উপর ঘর তুলে থাকতে হবে,” – চোখের কোনায় জল নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন সত্তরোর্ধ্ব হরিচরণ মণ্ডল।

অঞ্চলজুড়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আষাঢ়ের প্রথম দিনেই টানা বৃষ্টির সঙ্গে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ভাঙন শুরু হয়েছে। সাগরের উত্তাল ঢেউ এবং নদীর গতি বদলের ফলে বটবুনিয়াসহ আশপাশের এলাকায় ভাঙনের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জয় অভিযোগ করেন, “কোনো উন্নয়ন হয়নি এলাকায়। স্থানীয় নেতারা শুধু আশ্বাস দেয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড মাঝে মাঝে ব্লক আর বালির বস্তা ফেলে দায়সারা কাজ করে, কিন্তু স্থায়ী কিছু করে না।”

সাবেক ইউপি সদস্য নীলকমল জানান, “এখানে একের পর এক ভেড়ি দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কোনো স্থায়ী পরিকল্পনা নেই। বালুর বস্তা আর জিও ব্যাগ দিয়ে সাময়িক ঠেকানো যাচ্ছে, কিন্তু স্থায়ী বাঁধ না থাকলে প্রতিবারই একই দশা হবে।”

অভিযোগ উঠেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রকল্পের বরাদ্দের অপব্যবহার করছেন। এদিকে সংস্থাটি জানিয়েছে, নদী ভাঙন রোধে ব্লক, বালুর বস্তা, জিও ব্যাগ ব্যবহার করে কাজ চালানো হচ্ছে।

তবে বাস্তবতা হলো- জনগণের কষ্ট দিন দিন বেড়েই চলেছে। নদী গিলে নিচ্ছে তাদের বসতভিটা, কৃষিজমি, জীবনের সঞ্চয়। সরকারের স্থায়ী ও টেকসই উদ্যোগ না এলে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে- নয়তো এই অঞ্চল ধীরে ধীরে পরিণত হবে “উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের” ভূখণ্ডে।

খুলনা পানি উন্নয়ন বিভাগ-২ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম বলেন তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার মন্দিরের সামনে নদী ভাঙনে ওখানে আমাদের কাজ চলমান ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.