দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

“জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপট, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি : বিজয়ী প্রজন্মের মনস্তত্ব” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা

জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন,মানবিক ও সুন্দর বাংলাদেশ পাওয়া গেছে

62

আমাদের দেশের ইতিহাস, বিকৃতির ইতিহাস। দেশের ইতিহাস অনেকে যার যার মতো করে রচনা করেছেন-এমন মন্তব্য করে বক্তারা বলেছেন, ‘আমরা এখনো পরিপূর্ণভাবে ইতিহাস রচনা করতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখন হতাশায় পড়ে যাচ্ছেন।

এ সময় জাতির পক্ষ থেকে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার।’ জুলাই বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে দায়িত্ব ও করণীয় সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সুন্দর বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই রাজনৈতিক দল ও এর অংশীজনদের বলতে চাই, বিপ্লবের সাথে অসংগতিপূর্ণ কোনো কাজ আপনারা করবেন না। যদি করেন, তাহলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে, তাদের রক্তকে অপমান করা হবে। আর যারা জীবিত রয়েছেন, তারা ভীষণ কষ্ট পাবে ও অভিশাপ দিবে।’

বক্তারা বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সুন্দর বাংলাদেশ পাওয়া গেছে। যেকোনো অসঙ্গতিপূর্ণ কাজে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে, তাদের রক্তকে অপমান করা হবে। ফ্যাসিস্টদের পরিণতি সম্পর্কে বক্তারা বলেন, ‘অতীতের ফ্যাসিস্ট শাসকদের নাম ধর্মগ্রন্থেও উঠে এসেছে। একই পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হয়। দুঃখের বিষয়, ফ্যাসিস্টরা ইতিহাস পড়ে, কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নেয় না।’

বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে নগরীর আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে “জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপট, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি : বিজয়ী প্রজন্মের মনস্তত্ব” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় প্রধান অতিথির আলোচনা করেন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতক বিশ্লেষক ও গবেষক ড. ফয়জুল হক। প্রধান আলোচকের বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। আলোচনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর এ কে এম আওরঙ্গজেব। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরী সভাপতি মো. আরাফাত হোসেন মিলন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা সরকারি টিসার্চ ট্রেনিং কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ফেরদৌস হোসেন। জুলাইয়ের গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নাবিল ও রাসেলসহ অন্যান্য শিল্পিবৃন্দ। সেমিনারে খুলনা মহানগরীর শহীদ সাকিব রায়হানের গর্বিত পিতা আজিজুর রহমান, মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মাওলানা শাহরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা আলমগীর, মীম মিরাজ হোসাইন, এডভোকেট শফিকুল ইসলাম লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কিছু ইতিহাস মানুষের জন্য হয় আনন্দের, কিছু হয় বিষাদের-এ কথা উল্লেখ করে ড. ফয়জুল হক বলেন, ‘আর কিছু হয় গৌরবের। বিশেষত, যারা দেশের জন্য জীবন দেন, অতীতেও দিয়েছেন, ৪৭ সালে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও ৭১ এ এবং সর্বশেষ ২৪ এর জুলাইয়ে। তাদের ইতিহাসটা গৌরবের।’ তিনি বলেন, ‘কিছু লোক নাগরিকদের শান্তি কেড়ে নেয়ার মতো অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। তারা এটিকে তাদের পেশা মনে করেছে। একটা সময় তা নিজের অধিকার বলেই মনে করে, আর জনগণকে নিজের প্রজা মনে করে রাজা হয়ে বসে। কিন্তু গাছের ডালে যখন ঝাঁকুনি দেয়া হয়, ডালের রাজারাও তখন উড়ে গিয়ে পড়ে।’

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘একটা দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কিছু করণীয় আছে বলে আমরা মনে করি। আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো জাতি যেমন মুক্তি পেয়েছে, সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনৈতিক দলটিও একইভাবে মুক্তি পেয়েছে। সুতরাং এই প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন। আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি তাদের প্রতি সম্মান দিতে এবং তাদের থেকে দোয়া নিতে। কারণ তারা সৌভাগ্যবান, তাদের পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।’

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.