তিন পাশে সুন্দরবন বেষ্টিত কয়রা উপজেলাসহ দেশের ১৯ উপকূলীয় উপজেলা উন্নয়নে এবং বৃহত্তর সুন্দরবন সুরক্ষায় আসন্ন জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। উপকূল ও সুন্দরবন সংরক্ষণ আন্দোলন নামক কয়রাস্থ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বরাবর এ স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়। রবিবার (২৫ মে) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চল দিন-দিন চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একের পর এক দূর্যোগ আঘাত হানছে। লবণাক্ততা, নদীভাঙন, বন উজাড়, ও সুন্দরবনের প্রতিবেশ ব্যবস্থায় বৈরিতা মানুষের জীবন ও প্রকৃতিকে অনিরাপদ করে তুলছে। সাধারণ মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে ‘উপকূল ও সুন্দরবন সংরক্ষণ আন্দোলন’-এর পক্ষ থেকে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে বলা হয়, জাতীয় স্বার্থে উপকূলের উন্নয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়াসহ আসন্ন জাতীয় বাজেট এসব খাতে বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিত করা দরকার।
উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো, উপকূলে দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া ও বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে জরুরি তহবিল গঠন। উপকূলে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচী সম্প্রসারণ ও সুন্দরবন বিনাসী সব ধরনের অপতৎপরতা বন্ধ করে সুন্দরবন সুরক্ষার কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। লবণ পানির আগ্রাসন বন্ধে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান। উপকূলীয় জনপদে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ। সুন্দরবনের সুরক্ষা নিশ্চিতে বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান করা ও বন বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা। উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠন করা। ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবনাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা দরকার।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন উপকূল ও সুন্দরবন সংরক্ষণ আন্দোলনের সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম, খুলনা প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য আহমেদ মুসা রঞ্জু, আশরাফুল ইসলাম নূর, বাংলাদেশ বেতার খুলনার জেলা প্রতিনিধি কামাল মোস্তফা, কয়রা পাইকগাছা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি এস এ মুকুল, সাধারণ সম্পাদক রায়হান কবির, কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন, খুলনাস্থ কয়রার দক্ষিণ বেদকাশী সমিতির সভাপতি কবিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন মুন্না, সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার বাসিন্দা আলিমুল কবির, হাফেজ মজিবুল্লাহ, আবু ইসহাক, খলিলুর রহমান, আমির হামজা প্রমুখ।