দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রশাসনের সিসি ক্যামেরা অধিকাংশই অকার্যকর, বাড়ছে চুরি

7

খুলনা ব্যুরো: খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদে সরকারি বরাদ্দকৃত সিসি ক্যামেরা প্রকল্পে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সিসি ক্যামেরাগুলোর অধিকাংশই বর্তমানে অকার্যকর। সচল থাকা ক্যামেরাগুলোর মান এতটাই দুর্বল যে, সাম্প্রতিক চুরির ঘটনায় চোরের মুখ পর্যন্ত শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে।

সম্প্রতি এক সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি হয় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে। ক্যামেরার ফুটেজে চোরের চলাফেরা ধরা পড়লেও চেহারা এতটাই অস্পষ্ট যে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়দের প্রশ্ন, উপজেলা প্রশাসনের এই যদি হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তাহলে লাখ লাখ টাকা ব্যয় হলো কোন খাতে?

উপজেলার একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বরাদ্দকৃত অর্থে নিম্নমানের ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। এতে প্রকৃত কাজের চেয়ে বরাদ্দ অর্থের অপব্যবহারই বেশি হয়েছে।

একের পর এক মোটরসাইকেল চুরি হলেও এখনো চক্রের কোনো মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। থানা পুলিশ মাঝে মাঝে কিছু সদস্যকে আটক করলেও, তারা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তফা খায়রুল বাশার বলেন, চোরচক্র ধরতে অভিযান চলছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে প্রযুক্তিগত সহায়তা দুর্বল হওয়ায় চ্যালেঞ্জ থাকছে।

কয়েক মাস আগে উপজেলা ভূমি অফিসের তালা ভেঙে চুরি হলেও থানায় কোনো অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি করা হয়নি। এমনকি নাইটগার্ডকেও জিজ্ঞাসাবাদ না করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের সন্দেহ, ভিতরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে চুরির নাটক সাঁজানো হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তান্নি বলেন, চুরির ঘটনা দুঃখজনক। সিসি ক্যামেরাগুলো সচল থাকার কথা, তবে কেন বন্ধ রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে।

অপরদিকে নবাগত সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শোয়েব শাত-ঈল ইভান বলেন, সরকারি কোনো ক্যামেরা নেই। আমরা অফিসিয়ালি নিজেরা কিছু ক্যামেরা বসিয়েছি। চুরির ঘটনাটি আমার পূর্বসূরির সময়কার।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হলে অনেক কর্মকর্তাই মুখ খুলতে নারাজ। কেউ কেউ বলেন, ঝড়ের সময় ক্যামেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, কিছু মেরামত করা হয়, বাকিগুলো নিয়ে আর খোঁজ নেওয়া হয়নি।

উপজেলা পরিষদের সিএ মো: হারুন বলেন, ৪ লাখ টাকায় আইপি ক্যামেরা কেনা হয়েছিল। তবে সেগুলোর বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে।

সচেতন মহল বলছে, এই দুর্নীতি ও অনিয়মের পেছনে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করা এখন সময়ের দাবি। তারা দ্রুত দুদকের তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

উপজেলা প্রশাসন, পরিষদ, ভূমি অফিস, সাব রেজিস্ট্রি অফিসসহ সাধারণ মানুষের মূল্যবান নতিপত্র নিয়ে তারা আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, অথচ লাখ লাখ টাকার সরকারি প্রকল্পের ফলাফল শূন্য। এই দুর্নীতির দায় কার?

Leave A Reply

Your email address will not be published.