দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

প্রতি বছরোর ন্যায় আবারো প্লাবিত ভবদহের উত্তরাঞ্চল

"চরম দুর্ভোগে মানুষ"

124

জি এম টিপু সুলতান মনিরামপুর যশোর :-টানা বৃষ্টিতে যশোরের ভবদহের উত্তরে অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার ৫০ টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়ার আশংকা।এসব গ্রামের অনেক বাড়িঘর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনায় পানি ঢুকে পড়েছে।নদী ভরাট ও নদী দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ভবদহ অঞ্চল যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত।এই এলাকার পানি ওঠানামা করে মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদীর মাধ্যমে।তবে নদী দখল পলি পড়ে নদীগুলো নাব্যতা হারানোয় পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে।মনিরামপুর উপজেলার লখাইডাঙ্গা গ্রামের গৃহবধূ জয়শ্রী মণ্ডল বলেন উঠোনে প্রায় হাঁটুজল আর একটু জল বাড়লে ঘরে উঠে যাবে। ঘরে জল উঠলে রাস্তায় ওঠা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।পাঁচাকড়ি গ্রামের বুলবুল আহমেদ ও এমদাদ গাজী বলেন প্রতিবছর ৬/৭ মাস যাবত বন্যার পানি থাকার কারনে ছেলে মেয়ে নিয়ে অভাব অনাটনে জীবন যাপন করছি।সুজাতপুর গ্রামের সাধন চক্রবর্তী বলেন আমার বাড়ির উঠোনে জল। প্রতিদিন জল বাড়ছে।আর একটু বৃষ্টি হলে বাড়িঘর ছাড়তে হবে।একই গ্রামের সুভাষ বিশ্বাস বলেন যেভাবে জল বাড়ছে তাতে এবারও জলাবদ্ধতা ভয়াবহ রূপ নেবে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেন, বৃষ্টির পানি জমে ভবদহ এলাকা ডুবতে শুরু করেছে।এলাকার ৩০টিরও বেশি গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অনেক শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে।তিনি আরও বলেন, ভবদহের ২১-ভেন্ট স্লুইসগেটের মধ্যে মাত্র ছয়টি গেট খোলা হয়েছে।গেট দিয়ে বেশি পানি নামছে। সব গেট খুলে দিলে আরও বেশি পানি নামত।কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড সব গেট খুলছে না।এলাকার বিলে টিআরএম (জোয়ারাধার) চালু না করলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।স্থানীয় সাংবাদিক জি এম টিপু সুলতান বলেন টেকসই মজবুত ভেড়িবাধ নদী বা ছোট ছোট খাল চ্যানেল দখলমুক্ত নদি তার আগের জায়গা ফেরত পাবে।প্রশস্ত ভেড়ি বাঁধে ও প্রকৃতির সৌন্দর্যে এই এলাকা পর্যটক এলাকা বলে বিবেচিত হবে তাহলে স্থায়ী সমাধান হবে এলাকার ভুক্তভোগী জনগণ তাই মনে করে।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), যশোর কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ভবদহ ২১-ভেন্ট স্লুইসগেট থেকে খুলনার কুলবাড়িয়া পর্যন্ত হরি নদী, মনিরামপুর থেকে কেশবপুর পর্যন্ত হরিহর নদ, কেশবপুরের বরেঙ্গা থেকে কাশিমপুর পর্যন্ত আপার ভদ্রা নদীসহ ছয়টি নদী প্রায় ৮১ কিলোমিটার খননের কাজ শুরু হবে আগস্ট মাসে।

এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে ৪৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দুই-এক মাসের মধ্যে এ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে পাউবো।পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী সাংবাদিক দের বলেন নদীতে জোয়ারের সময় ভবদহ স্লুইসগেটের ২১-ভেন্টের ওপর চারটি বড় ও ১৫টি ছোট বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ভাটির সময় ছয়টি গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। গেটগুলো দিয়ে প্রচুর পানি বের হচ্ছে। এতে এলাকার পানি দ্রুত সরে যাবে। তিনি বলেন, ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সেনাবাহিনী আগামী মাসে ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খননের কাজ শুরু করবে। আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে ।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.