মোংলা প্রতিনিধি :সুন্দরবনের গহীনে আগুন জ্বালিয়ে শুঁটকি তৈরী করে তা পাচাঁরের সময় ১৮ বস্তা চিংড়ি মাছের শুঁটকি জব্দ করেছে বন বিভাগ। শনিবার রাতে পুর্ব সুন্দরবনের হারবাড়িয়া সংলগ্ন চরাপুটিয়া সিমানার বড় ডাবুর খাল এলাকা থেকে দুইটি ট্রলার বোঝাই এ শুঁটকি জব্দ করা হয়। তবে বনরক্ষীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে বনের গহীনে পালিয়ে যাওয়ায় এর সাথে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভাব হয়নী। (১৩ জুলাই) রবিবারে বিকালে চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা এ তথ্য জানায়।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দিপক চন্দ্র দাস বলেন, গোপন সংবাদের সুত্র থেকে জানতে পারি, একদল দুর্বৃত্ত সুন্দরবনের গহীনে কিটনাশক দিয়ে মাছ শিকার করে তা বনের কাঠ দিয়ে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরনী করছে এবং তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ শুঁটকি পাচাঁর করছে। সেই খবরের সুত্রধরে শনিবার ভোর থেকেই সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খালে অভিযান শুরু করে বন রক্ষীরা। শনিবার দিনভর অভিযান চালিয়ে অাসার সময় চরাপুটিয়া সিমানার বড় ডাবুর খালে দুইটি ট্রলার দেখতে পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
এ সময় বনরক্ষীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পাচারকারীরা ট্রলার থেকে লাফ দিয়ে বনের গহিনে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা সম্ভব হয়নি, তবে পাচারকারীদের ফেলে যাওয়া ১৮ বস্তা চিংড়ি শুঁটকি মাছ, দুইটি ট্রলার ও শুঁটকি তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে কয়েক বন রক্ষী বলেন, মোংলা এলাকার মোশারেফ হোসেন, ওলি সুমন, লিটন গাজী, বেলায়েত হোসেন, পল্টু জমাদ্দার, দাকোপের রেখামারী এলাকার মিজান, জমির উদ্দিন সহ বেশ কয়েকজনের একটি চক্র সুন্দরবনের খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার, বনের অভায়রণ্যে বিষ দেয়া, হরিণ শিকার, নিষিদ্ধের সময় কাকড়া ধরা, বিভিন্ন পন্যপ্রানী পাঁচার সহ বহু অপরাধ মুলক কাজের সাথে জড়িত। এসকল কাজের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ ও থানায় মামলা সহ অভিযোগ রয়েছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আরও বলেন, দুইটি ট্রলারে প্রায় ১০/১২ পাচারকারী জেলে ছিল। বন রক্ষীদের বোট দেখার সাথে সাথে বনের গহিনে পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা যায়নি। তবে সম্প্রতি শুঁটকি জব্দের ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে, কিছু প্রমানাদিও হাতে এসেছে। এছাড়া গোপন সুত্রে জানতে পেরেছি এর আগে ৬ জুলাই রাতে একই গ্রুপ লিটন গাজীর ট্রলারে আরো ৩০ বস্তা শুঁটকি পাথরঘাটা দিয়ে পাচাঁর করেছে বলে জানতে পেরেছি।
অভিযানও চলমান রয়েছে, এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হবে। আর জব্দ করা জাল ও অন্যান্য মালামাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে। জব্দকৃত শুঁটকিমাছের পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা পেলে শুঁটকি মাছ পুড়িয়ে ফেলা বা নিলামে বিক্রি করার ব্যাপারে পরবর্তী ব্যাবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া আপাদত এ ঘটনায় বন আইনে ইউডিওআর (অজ্ঞাত) মামলা করা হয়েছে বলে জানান এ বন কর্মকর্তা।