দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

বুড়ি ভদ্রা নদীখননে দুর্নীতি

ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শঙ্কা

84

হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর (যশোর) :বুড়ি ভদ্রা নদীর খননকাজ অসমাপ্ত রেখে দুর্নীতির পথ খুঁজছেন ঠিকাদার। শিডিউল অনুযায়ী পাঁচ মাসের মধ্যে বুড়ি ভদ্রা নদীর খননকাজ শেষ না করে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের অপেক্ষায় আছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।

দেখা যায়, ১৫-২০ শতাংশ নদী খননের কাজ করে গত তিন মাস নদীর খননকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে মৌসুমি বৃষ্টিতে ওই নদীতে দুই ফুট পানি জমেছে। নদীপাড়ের মানুষের দাবি, ভরে থাকা নদী খনন না করে এক্সকাভেটর দিয়ে দু-তিন দিন কোনো রকমে কাদা গুলিয়ে যেনতেনভাবে কাজ শেষ হয়েছে বলে দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টাকার সিংহ ভাগই – পকেটস্থ করা হয়, যা নদী খননে বিলম্ব হওয়ার একমাত্র কারণ।

২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ওই নদীর খননকাজ শুরু করে চলতি জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। তবে এরই মধ্যে বরাদ্দের প্রায় অর্ধেক অর্থ তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এতে জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারি উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, যশোরের কেশবপুর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) চলতি বছর কেশবপুরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়ি ভদ্রা নদীর মঙ্গলকোট ব্রিজ থেকে উজানে চারের মাথা পর্যন্ত ৪১ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক ৮ কিলোমিটার নদী খননের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করে। শিডিউল অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে খননকাজ শুরু করে একই বছরের জুন মাসের মধ্যে শেষ করার কথা। কিন্তু পাঁচ মাস শেষ হতে চললেও নামেমাত্র খনন করে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

ওই কাজটি করছেন রংপুরের ইউনাইটেড ব্রাদার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জাতার এই দিংস্থার ভূদী খননের কাজটি না করে ১৫ লাখ টাকায় খনন কাজটি বিক্রি করে দিয়েছেন যশোরের জনৈক জাকারিয়া নামে এক সাব ঠিকাদারের কাছে। এই ঠিকাদার পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে শিডিউল অনুযায়ী নদী খনন না করে, মঙ্গলকোট ব্রিজের মাথার পশ্চিম পাশে ১০০ মিটার, চারের মাথায় ৫০ মিটার এবং এর মাঝখানে ৩০ মিটার যেনতেনভাবে এক ফুট গভীর করে এবং চার-পাঁচ মিটার চওড়া করে নদী খনন করে তিন মাস ধরে খননকাজ বন্ধ রেখেছেন।

এলাকাবাসী বলছেন, বর্ষা মৌসুমের আগে নদী খননের কাজ হাতে নেওয়া হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব রেওয়াজমতে দুর্নীতির আশ্রয় নিতে ভরা বর্ষা চলাকালে নদী খনন করা হয়।

সাব ঠিকাদার জাকারিয়া বলেন, ‘শিডিউল অনুযায়ী নদী খনন করা হবে। কিন্তু আ.লীগ নেত্রী রেহেনার কাছ থেকে এক্সকাভেটর ভাড়া নিতে তাকে এক মাস আগে এক লাখ টাকা অগ্রিম দেওয়া হলেও এখন (১৬ জুন) পর্যন্ত মেশিন পাওয়া যায়নি। ওই টাকা ফেরত নিতে কেশবপুরে এসেছি।’ কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীর প্রকৌশলী সুমন শিকদার বলেন, ‘পাঁচ মাসের মধ্যে বুড়ি ভদ্রা নদী খননের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এরই মধ্যে ৪০-৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া এক্সকাভেটর মেশিন পাওয়া না যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছেন। কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, পাঁচ মাসের মধ্যে বুড়ি ভদ্রা নদীর খননকাজ শেষ করার কথা থাকলেও আশানুরূপ খনন করা হয়নি। আগামী ১২ দিনের মধ্যে বাকি খননকাজ শেষ করা যাবে না। এর জন্য ঠিকাদারকে এ পর্যন্ত ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.