গাজার দিকে রওনা হওয়া একটি সাহায্যবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক করেছে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানানো হয়েছে, জাহাজটির ক্রু সদস্যদের ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত এই জাহাজটিকে গাজার উপকূলে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে জব্দ করে ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা দাবি করেছে, জাহাজটিতে থাকা ব্যক্তিরা “গণমাধ্যমে প্রচারণা পাওয়ার জন্য প্ররোচনামূলক নাটক সাজিয়েছে” এবং জাহাজটিকে কটাক্ষ করে ‘সেলফি ইয়ট’ আখ্যা দিয়েছে।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে ১২ জন মানবাধিকারকর্মী রয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, এবং আরও কয়েকটি দেশের নাগরিক।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জাহাজ থেকে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায়, জাহাজে থাকা মানবাধিকারকর্মীরা হাত উঁচিয়ে বসে আছেন—যা ইসরায়েলি বাহিনীর হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেয়।
ত্রাণবাহী এই জাহাজটিতে গাজার মানুষের জন্য ছিল জরুরি জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম—চিকিৎসা উপকরণ, খাদ্যপণ্য (ময়দা, চাল, শিশুদের দুধ), পানিশুদ্ধকরণ কিট, স্যানিটারি পণ্য, শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ ও ক্রাচ ইত্যাদি।
ইসরায়েল গত ২ মার্চ থেকে গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে, যার ফলে বহু শিশু অনাহারে প্রাণ হারিয়েছে। এই মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদ জানাতে এবং সরাসরি ত্রাণ পৌঁছাতে ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটি ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে।
জাহাজটির নাম রাখা হয়েছে গাজার প্রথম নারী মৎস্যজীবী ‘ম্যাডলিন’–এর নামে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গাজার ২৩ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ‘ম্যাডলিন’–কে কোনোভাবেই গাজার উপকূলে ভিড়তে দেবে না।