পূর্ব জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সোমবার (২৬ মে) ‘জেরুজালেম দিবস’ উপলক্ষে উগ্র ডানপন্থী ইসরাইলিরা আল-আকসা প্রাঙ্গণ ও জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর একটি কার্যালয়ে অনুপ্রবেশ করে। এতে শুরু হয় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা ও হয়রানি।
রয়টার্স জানায়, মুসলিম-অধ্যুষিত পূর্ব জেরুজালেমের অলিগলি ঘুরে ইসরাইলিরা মিছিল বের করে। তারা ‘আরবদের মৃত্যু হোক’, ‘তোমাদের গ্রাম জ্বলে যাক’—এমন ঘৃণামূলক স্লোগান দেয়। এই মিছিলে অংশ নেন ইসরাইলের কট্টর জাতীয়তাবাদী নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরসহ সরকারের একাধিক সদস্য।
১৯৬৭ সালে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং তা এখনো তাদের দখলে রয়েছে। প্রতিবছর ২৬ মে দিনটিকে তারা ‘জেরুজালেম দিবস’ হিসেবে পালন করে। এই উপলক্ষে আল-আকসায় প্রবেশ করে ধর্মীয় উত্তেজনা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা ছড়ানো তাদের পুরনো কৌশল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরের দিকে পুরনো শহরে ঢুকে ইসরাইলিরা দোকানপাটে হামলা চালায়, ফিলিস্তিনিদের হেনস্তা করে এবং এক নারী ও সাংবাদিকের ওপর থুতু ছুড়ে দেয়। আশপাশে পুলিশ থাকলেও তারা নীরব ভূমিকা পালন করে। ঘটনাস্থল থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, পুলিশও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবৈধ বলে গণ্য করা হয়। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ হলেও ইসরাইল তা অব্যাহত রেখেছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বলেন, “জেরুজালেম আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাজধানী, এবং এটি ইসরাইলের সার্বভৌমত্বের অধীনে থাকবে।”
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদাইনাহ এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গাজায় যুদ্ধ, আল-আকসায় ধারাবাহিক অনুপ্রবেশ এবং পতাকা মিছিল গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলি মিছিল ও আল-আকসা প্রাঙ্গণে অনুপ্রবেশ শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়, বরং পুরো অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার এক পরিকল্পিত পদক্ষেপ। পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।