মাত্র একদিন আগেও ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলছিলেন জিম্বাবুয়ের হয়ে। আর পরদিনই পাকিস্তানে লাহোর কালান্দার্সকে জিতিয়ে দিলেন পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) এর শিরোপা। সিকান্দার রাজার এই অবিশ্বাস্য যাত্রা যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।
শনিবার নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন রাজা। সেদিনই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ায় সুযোগ পান দেশে ফেরার। রাতে বার্মিংহামে থেকে ভোরে দুবাই হয়ে আবু ধাবি পৌঁছান দুপুরে, তারপর সোজা পাকিস্তানে উড়ে যান পাকিস্তানে।
রোববার তিনি পৌঁছান গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে, ম্যাচ শুরুর মাত্র ১০ মিনিট আগে। সেখানে তিনি মাঠে নামেন লাহোর কালান্দার্সের হয়ে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিপক্ষে পিএসএলের ফাইনালে।
প্রথম ইনিংসে বল হাতে তিনি আউট করেন কোয়েটার রাইলি রুশোকে, তার বোলিং ফিগার ছিল ১ উইকেটে ৪৩ রান। কোয়েটা টস জিতে ব্যাট করে ২০১ রানে ইনিংস শেষ করে। হুসেন নওয়াজ ৪৩ বলে ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। লাহোরের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ৩ উইকেট নিয়ে বড় ভূমিকা রাখেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে লাহোর কালান্দার্স মাঝ পথে থেমে যায়; ১০ ওভারে স্কোর ছিল ৯৫/১, এরপর ৭ উইকেট হারিয়ে করে মাত্র ৪৮ রান। তখন জয় পেতে দরকার ছিল ২০ বলে ৫৭ রান। এমন কঠিন সময়েই ক্রিজে নামেন রাজা।
রাজার সঙ্গী ছিলেন কুশল পেরেরা। একসঙ্গে তারা গড়েন ৫৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। রাজা প্রথম বলেই চার ও ছয় মারেন মোহাম্মদ আমিরকে। এরপর পেরেরা পরপর তিনটি ছয় ও দুটি চার হাঁকিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৩ রান।
ফাহিম আশরাফের করা শেষ ওভারে প্রথম তিন বলে আসে ৫ রান। চতুর্থ বলে রাজা পয়েন্টের ওপর দিয়ে মারেন ফ্ল্যাট ছক্কা। পঞ্চম বলে মিড উইকেট দিয়ে চারে বল পাঠিয়ে ম্যাচ জিতে নেন। এই জয়ে লাহোর কালান্দার্স পেয়ে যায় গত চার বছরের মধ্যে তৃতীয় পিএসএল শিরোপা।
ম্যাচ শেষে ৩৯ বছর বয়সী রাজা বলেন, “আমি বার্মিংহামে রাতের খাবার খেয়েছি, দুবাইয়ে সকালের নাশতা, আবু ধাবিতে দুপুরের খাবার আর পাকিস্তানে এসে রাতের খাবার খেয়েছি। এটাই পেশাদার ক্রিকেটারের জীবন। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ এবং নিজেকে ধন্য মনে করছি।”