গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৮৪ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরেই প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ জনের বেশি। একইসঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরেও ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কাতারে চলমান পরোক্ষ যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই এই ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। খবর আল-জাজিরার।
বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া শিশুদের মরদেহ উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা। মোবাইলের আলোয়, হাতে সরঞ্জাম নিয়েই তারা মাটিচাপা কংক্রিট ভেঙে উদ্ধার অভিযান চালান।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরাইল বর্তমানে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলোকে লক্ষ্য করে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালাচ্ছে। এই হামলার উদ্দেশ্য—মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করে অস্থায়ী শিবিরে ঠেলে দেওয়া। এতে জনসংখ্যা পুনর্বিন্যাস এবং বাস্তুচ্যুতি সহজ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নিতে ইসরাইলি প্রতিনিধি দল এখন কাতারের দোহায় অবস্থান করছে। কাতার, মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলমান আলোচনায় অংশ নিচ্ছে হামাসও। এরই মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির সময় ইসরাইলি-আমেরিকান বন্দি এডান আলেক্সান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, দ্রুতই একটি চুক্তি ঘোষণা আসতে পারে।
তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতি হলেও গাজায় সামরিক অভিযান থামবে না। তার এমন অবস্থান আন্তর্জাতিক সমালোচনা ডেকে এনেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই অবরোধকে “লজ্জাজনক মানবিক বিপর্যয়” বলে অভিহিত করেছেন।
জাতিসংঘ বলছে, গাজায় এখন ৫ লাখের বেশি মানুষ অনাহারের মুখে। খাদ্য, ওষুধ এবং মানবিক সহায়তা বন্ধ থাকায় ৯০ শতাংশ মানুষই একাধিকবার গৃহহীন হয়েছেন।