১০ মে, শনিবার রাত ২টা ৯ মিনিট। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটির কাছের বাসিন্দা আহমাদ সুবহান প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ শুনে চমকে ওঠেন। জানালার কাঁচ কেঁপে ওঠে। তখনই স্পষ্ট হয়—ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে, যা যুদ্ধের দিকে মোড় নিতে চলেছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা উত্তেজনা চূড়ান্ত রূপ নেয় ওই রাতেই। ভারত পাকিস্তানের তিনটি প্রধান বিমানঘাঁটি ও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এসব হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল রাজধানী ইসলামাবাদের খুব কাছে অবস্থিত নূর খান ঘাঁটি, যার আশপাশে সাধারণ মানুষের বসবাস।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানান, ‘আমাদের রাজধানীর এত কাছে হামলার পর প্রতিশোধ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।’
এই ঘটনায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিশ্চিত করে, তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছে ভারতের বিভিন্ন বিমানঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনায়। পাকিস্তানের দাবি, তাদের তিনটি ঘাঁটিতে ভারতের হামলায় ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও ভারত বলে, এটি কেবল প্রচলিত অস্ত্র বহন করে।
এত দ্রুত ও বিস্তৃত আক্রমণের পর যুদ্ধাবস্থা চূড়ান্ত রূপ নেয়। পাকিস্তান অভিযোগ করে, ভারত তাদের সামরিক সদর দপ্তরের কাছাকাছি হামলা চালিয়ে সীমা অতিক্রম করেছে। আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের সংঘাত পারমাণবিক বিপর্যয়ে পরিণত হতে পারে—এমন আশঙ্কা তৈরি হয়।
শনিবার দিনের শেষে হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে এর পেছনে চলে দীর্ঘ কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ফোনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি সমঝোতার প্রস্তাব দেন। যদিও মোদি সরাসরি সম্মতি দেননি, বরং উত্তেজনা বাড়লে শক্ত প্রতিক্রিয়ার হুমকি দেন।
পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে। সেই ঘটনার প্রতিশোধে ৭ মে ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায়। এরপর একের পর এক পাল্টা হামলায় দু’দেশই ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নূর খান বিমানঘাঁটিতে হামলা ভারতের পক্ষ থেকে একটি বিপজ্জনক বার্তা। আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি বলেন, ‘এ ধরনের সংঘাত সীমিত থাকবে—এমন ভাবা বোকামি।’
পরিস্থিতি এখন থেমে থাকলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্বের আগুন জ্বলছেই—যেকোনো মুহূর্তে তা আবার ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।