বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ এখনো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের জন্য ভালো সমাধান হিসেবে দেখে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরার জনপ্রিয় বৈশ্বিক সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট অ্যা নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ?’ শিরোনামে এই সাক্ষাৎকার আল–জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস জানান, দেশের জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চলে যেতে বলছে না। বরং তারা আশা করছে একটি ভালো নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে সরকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন হচ্ছে। আমরা এমন কোনো পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি যেখানে জনগণ বলছে, দ্রুত অন্তর্বর্তী সরকার চলে যাক।’
শেখ হাসিনার পতনের পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে অধৈর্য আছে, তবে ‘মধুচন্দ্রিমা’ শেষ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে সমন্বয় করে তারা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে কাজ করছেন। মূল লক্ষ্য হলো মিয়ানমারের সঙ্গে বোঝাপড়া তৈরি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে তাদের ঘরে ফেরানোর পথ সুগম করা।
দেশে অর্থবহ সংস্কার এবং একটি সেরা নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, যদি সংস্কারের তালিকা ছোট হয়, তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি সংস্কারের পরিধি বড় হয়, তাহলে আগামী বছর জুনের মধ্যে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে। তবে জুনের পর নির্বাচন পিছিয়ে যাবে না বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনেকটাই আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভর করছে। দলটি এখনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। পাশাপাশি নির্বাচনী সময় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে প্রশ্ন করা হলে তিনি পরিষ্কার করেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন অংশগ্রহণের বিষয়টি সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না; বরং সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বিবেচিত হবে।