জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বলেছে, এটি ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি বৈ অন্য কিছু নয়’। সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের এক প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর এই প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছে। গত শনিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে সেনাসদরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্ট ‘অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ব গল্পের সম্ভার’।
গত শুক্রবার হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে একটি পোস্টে দাবি করেন, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ষড়যন্ত্র চলছে, যা ভারতের পরিকল্পনা। তিনি আরও দাবি করেন, সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং তাপস রায়কে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১১ মার্চ দুপুর ২:৩০-এ ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাঁকে এবং আরও দুজনকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। তাঁদেরকে আসন সমঝোতার বিনিময়ে এই প্রস্তাব মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়।
নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাসদর দপ্তর স্বীকার করেছে যে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির আরেক মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের সঙ্গে ১১ মার্চ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বৈঠক হয়েছিল। তবে সেনাবাহিনী হাসনাত আবদুল্লাহর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এই বৈঠকটি ছাত্রনেতাদের আগ্রহেই হয়েছিল। সেনাসদরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সারজিস আলম ১১ মার্চ সেনাপ্রধানের মিলিটারি এডভাইজারকে ফোন করে বৈঠকের সময় চান, যার প্রেক্ষিতে তাদেরকে সেনাসদরে আসার জন্য বলা হয়।
নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্টের পর জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে হাসনাত আবদুল্লাহ সরাসরি জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, ‘আমি তো সেখানে “ক্যান্টনমেন্ট” উল্লেখ করেছি, আপনারা কথা বলতে পারেন সেখানে।’
সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নেত্র নিউজকে বলেছেন, ছাত্রনেতাদের আগ্রহেই এই বৈঠকটি হয়েছিল। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে নেত্র নিউজ স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি।
২০২৩ সালের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলম মুখ্য সংগঠকের দায়িত্ব পান।
সেনাবাহিনীর এই প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে।