দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

শেষ ওভারে ৩০ রান, রংপুরের অবিশ্বাস্য জয়

21

বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ উপহার দিলেন নুরুল হাসান সোহান। শেষ ওভারে ৩০ রান তুলে রংপুর রাইডার্সকে স্মরণীয় এক জয় এনে দিলেন এই কিপার-ব্যাটার।

চলতি বিপিএলের ১৩তম ম্যাচে বৃহস্পতিবার জয় মনে হচ্ছিল ফরচুন বরিশালের হাতের মুঠোয়। জিততে হলে রংপুরের শেষ ওভারে দরকার ছিল ২৬ রান। মাইল মেয়ার্সের করা সেই ওভারে রূপকথার জন্ম দিয়ে তিনটি করে ছক্কা ও চারে ৩০ রান তোলেন সোহান।

১৯৮ রানের লক্ষ্যে তার ৭ বলে ৩২ রানের ইনিংসে বরিশালকে ৩ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকল রংপুর। আসরে ছয় ম্যাচে এটি তাদের ষষ্ঠ জয়। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পেল গতবারের চ্যাম্পিয়ন ও আসরের অন্যতম ফেভারিট বরিশাল।

শেষ ২ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ৩৯ রান। জাহানদাদ খানকে টানা দুই ছক্কা মারেন খুশদিল। পরের বলে তিনি আউট হন। পরের বলে নাটকীয় ‘অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড’ এর নিয়মে আউট হন মেহেদী হাসান। পরের বলটি ছিল ওয়াইড। ওভারের পঞ্চম বলে মোহাম্মদ সাইফদ্দিন হন ক্যাচ আউট। শেষ বলে রান নিতে পারেননি কামরুল।

শেষ ওভারে স্ট্রাইক পান নুরুল। বল দেওয়া হয় অনিয়মিত বোলার মেয়ার্সকে। প্রথম বলটি সোহান ওড়ান ছক্কায়। এরপর টানা দুটি বাউন্ডারি। এরপর ছয়, চার ও ছয় এবং রংপুরের শিরোপা জয়রে মত বাধ ভাঙা উল্লাস।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো ছিল না রংপুরের। ৭ ওভারে তারা তোলে ৪১ রান। শেষ ১৩ ওভারে দরকার ছিল ১৫৭। দলকে কক্ষচ্যূত হতে দেননি মূলত ইফতিখার আহমেদ ও খুশদিল শাহ, ৫৩ বলে ৯১ রানের জুটিতে। দুজনেই আউট হন ৪৮ রান করে।

ইফতিখারের ৩৬ বলের ইনিংসে তিনটি করে ছিল ছক্কা ও চার। ২৪ বলে ৫ ছক্কা ও ২ চারে নিজের ইনিংস সাজান খুশদিল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ৫ উইকেটে ১৯৭ রান তোলে বরিশাল। ৭ ছক্কা ও ১ চারে ২৯ বলে অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস খেলেন মেয়ার্স।

শেষ দুই ওভারে ৪৪ রান তোলেন মেয়ার্স ও ফাহিম আশরাফ। ১০ ওভারে ৮০ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে একই ওভারে প্রথমে শান্ত ৩০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ রান করে, পরে তামিম ৩৪ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৪০ রান করে আউট হন।

এই ইনিংসে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৮ হাজার রান পূর্ণ করেন তামিম।

১১তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমণে এনে বরিশালের দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠান রংপুর রাইডার্সের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি। ওভারের প্রথম বলে শান্তকে এবং শেষ বলে তামিমকে শিকার করেন এই পেসার।

৯০ রানের মধ্যে বরিশালের দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দলের রানের চাকা সচল রাখেন কাইল মেয়ার্স ও তাওহিদ হৃদয়।

১৭তম ওভারে মেয়ার্স-হৃদয়ের জুটি ভাঙেন পেসার আকিফ জাভেদ। ১টি করে চার-ছক্কায় ১৮ বলে ২৩ রানে আউট হন হৃদয়। পাঁচ নম্বরে নামা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২ রানে আউট হলে বরিশালকে বড় সংগ্রহ এনে দেন মেয়ার্স ও ফাহিম। পঞ্চম উইকেটে মায়ার্সের সাথে ৯ বলে ২৯ রানের জুটিতে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬ বল খেলে ২০ রান তুলেন আশরাফ।

শেষ ওভারে আশরাফ রান আউট হলেও ৩টি ছক্কায় ২২ রান তোলেন মেয়ার্স। কামরুল ৪৭ রানে ২টি, আকিফ ও সাইফুদ্দিন ১টি করে উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৯৭/৫ (তামিম ৪০, শান্ত ৪১, মেয়ার্স ৬১*, হৃদয় ২৩, মাহমুদউল্লাহ ২, ফাহিম ২০, জাহান্দাদ ১*; শেখ মেহেদি ৩-০-১৯-১, ইফতিখার ২-০-২৩-০, আকিফ ৪-০-১৬-১, নাহিদ ৪-০-৪৭-০, সাইফ ৪-০-৪২-১, কামরুল ৩-০-৪৭-২)।

রংপুর রাইডার্স: ১৩.২ ওভারে ১১৩/১ (তৌফিক ৩৮, হেলস ১, সাইফ ২২, ইফতিখার ৪৮, খুশদিল ৪৮, সোহান ৩২*, শেখ মেহেদি ০, সাইফ ০, কামরুল ০*; মেয়ার্স ২-০-৩৩-০, তানভির ৪-০-৩৩-১, আফ্রিদি ৪-০-৩০-১, জাহান্দাদ ৪-০-৪৮-২, ফাহিম ৪-০-৩০-১, রিশাদ ২-০-২৬-১)।

ফল: রংপুর রাইডার্স ৩ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: নুরুল হাসান সোহান।

Leave A Reply

Your email address will not be published.