শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ আমলে নিলেন ট্রাইব্যুনাল

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় ‘গণহত্যার নির্দেশ ও উসকানি’সহ মানবতাবিরোধী পাঁচটি অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি হয়েছে।

রবিবার (১ জুন) দুপুরে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। সদস্য হিসেবে আরও রয়েছেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে দুপুর ১২টায় শেখ হাসিনা, কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমন করতে সরকারের ‘রক্তাক্ত’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শেখ হাসিনা ছিলেন মূল সিদ্ধান্তদাতা।

অভিযোগপত্রে জানানো হয়, গত বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার চাঁনখারপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালিয়ে প্রায় দেড় হাজার মানুষ হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় চাঁনখারপুলে ৬ জনকে হত্যার আলাদা অভিযোগও আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

তদন্ত সংস্থা গত ১২ মে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ সংবলিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেয়। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম তখনই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে ‘আয়নাঘরের নিউক্লিয়াস’ হিসেবে অভিহিত করেন।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালের প্রথম মামলাই ছিল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা রয়েছে—একটি গুম-খুনের অভিযোগে এবং অন্যটি ২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে ‘নির্মম অভিযান’ নিয়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলাগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করতে চলেছে। দেশব্যাপী চাঞ্চল্য তৈরি করেছে সাবেক শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের এমন সরাসরি অভিযোগ ও আইনি পদক্ষেপ।