খুলনা: মৃত ব্যক্তির নামে হেবা দলিল করতে গেলে মৃত ব্যক্তির ভাইপোদের বাঁধায় তা পণ্ড হয়। সোমবার খুলনার ফুলতলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে ঘটে এমন ঘটনা।
জানাযায়, সোমবার সকালে ফুলতলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে হেবা দলিল করতে যান শিরোমনি আটরা গিলাতলা এলাকার মো. হাবিবুর রহমান ও তার ভাই আছাবুর রহমান। তারা তার মৃত বাবা আব্দুল বারিকের নামে ওই হেবা দলিল করতে যান। এসময় মৃত আব্দুল বারিকের ভাইপোদের বাঁধার মুখে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। তখন বিষয়টি টক অব দ্যা ফুলতলায় পরিনত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, শিরোমনি আটরা গিলাতলা এলাকার আব্দুল বারিক প্রায় আড়াই বছর আগে মৃতবরণ করেন। তার দুই ছেলে মো. হাবিবুর রহমান ও মো. আছাবুর রহমান। তারা তাদের ছোট চাচা মুজিবর রহমানের পৈত্রিক সম্পত্তি শিরোমনি মৌজার ৯৩, ৫৮, ৯৯, ৯৮, ৫৪৮, ১৪৪৩, ২১০৬ খতিয়ানের জমি সুকৌশলে, ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে লিখে নিতে যায়। কিন্তু ওই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন তাদের পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ চলছিল। ফলে বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে সালিশাধীন রয়েছে। এরিমধ্যে হাবিবুর রহমান ও আছাবুর রহমান সুকৌশলে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মদদে তার মৃত বাবার নামে হেবা দলিল করতে যায়। সোমবার দলিল লেখক দলিল রেজিষ্ট্রি করতে সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিলটি সাবমিট করেন। তখন সাব রেজিষ্ট্রার উভয়পক্ষকে দেখতে চান এবং তার সম্মুখে আসতে বলেন। একই সাথে সেখানে মৃত আব্দুল বারিকের ভাইপোরা উপস্থিত থাকায় তাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হয়। স্থানীয়রা আরো জানায় এ কাজে দলিল লেখকের কারসাজি থাকতে পারে।
যদিও ওই দলিল লেখক মো. নাজমুল হক জানান, আমার কাছে আছাবুর, হাবিবুরকে নিয়ে আসে সিরাজ চাচা ও শেখ ফজলুর রহমান চাচা। তারা আমাকে বলে আব্দুল বারিক অসুস্থ্য। আমি দলিল লিখে তাদের কাছে দেই। তারা স্বাক্ষর, টিপ দিয়ে নিয়ে আসে। আমি দলিল দাখিল করলে জানতে পারি তিনি অনেক আগেই মারা গেছেন। তখন আমি সিরাজ চাচা ও শেখ ফজলুর রহমান চাচাকে বললাম, আপনারা আমাকে কাছে তথ্য গোপন করলেন কেন? তারা তখন বলে, বাবা ভুল হয়েগেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুর রহমান জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
ফুলতলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সাব রেজিষ্টার মো. তুষার আলম জানান, দলিল সাবমিট করলেই দলিল রেজিষ্ট্রশন হয় না। দাতা ও গ্রহীতার উপস্থিত থাকতে হয়। উভয়পক্ষকে স্বাক্ষর, টিপ সহি প্রদান করতে হয়। আমার কাছে সোমবার একটি হেবা দলিল করতে এসেছিল। কিন্তু এক পক্ষ উপস্থিত থাকায় দলিলটি বাতিল করা হয়। পরে জানতে পারি যার নামে দলিল হচ্ছিল, তিনি অনেক আগেই মৃত্যুবরণ করেছেন। মূলত সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য এ ধরনের কাজ করতে পারে তারা।