বেনাপোল প্রতিনিধিঃ যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের চাকরি রক্ষায় প্রতি সদস্যর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে বন্দরে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান আল-আরাফাত সার্ভিস (প্রা.) লিমিটেড-এর অপারেশনাল ম্যানেজার শামিম শিকদারের নামে। বন্দরের চলতি পিমা সিকিউরিটি গার্ডে নিয়োজিত ১২৯ জন নিরাপত্তাকর্মী এ অভিযোগ করেছেন।
বেনাপোল বন্দর পরিচালকের কাছে বুধবার (১৬ জুলাই) এক লিখিত অভিযোগপত্রে তারা এ অভিযোগ উল্লেখ করেন। বর্তমানে নিয়োজিত কম্পানি পিমা-এর চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩০ জুলাই। নতুন নিয়োগ পাওয়া কোম্পানির প্রতিনিধি অপারেশনাল ম্যানেজার শামীম শিকদার তাদের জানিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে কোম্পানিটি বেনাপোল বন্দরে তারা কার্যক্রম শুরু করবে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালকের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগপত্রে পিমা সিকিউরিটির সদস্যরা উল্লেখ করেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে বন্দরে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সম্প্রতি তাদের প্রতিষ্ঠান পিমা সিকিউরিটি’র মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির অপারেশনাল ম্যানেজার শামীম শিকদার তাদের জানিয়েছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে কোম্পানিটি বন্দরে কার্যক্রম শুরু করবে। তিনি চাকরি চালু রাখতে পিমা সিকিউরিটির প্রত্যেক সদস্যের কাছে ৩০ হাজার টাকা করে ঘুষ দাবি করেছেন। নতুন নিয়োগ প্রাপ্তদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। টাকা না দিলে চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পিমা সিকিউরিটির কর্মীরা।
ভুক্তভোগী নিরাপত্তাকর্মীরা বলেন, আমরা সবাই নিম্নআয়ের মানুষ। স্বল্প বেতনের এই চাকরিতে ঘুষ দিয়ে চাকরি রক্ষা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া নিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে কোথাও আর্থিক লেনদেনের কথা উল্লেখ নেই। চাকরির জন্য ঘুষের নামে অর্থ আদায়ের চেষ্টা অন্যায় ও বেআইনি। আমরা চাই এ ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
ঘুষ দাবির ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিমা সিকিউরিটির এক কর্মী জানান, নতুন নিয়োগ পাওয়া আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড,’র কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী আমাদের কাছে ঘুষ দাবি করেনি। আমার প্রতিষ্ঠান পিমা সিকিউরিটির কমান্ডার (সিও) আল-আমিন ও সুপার ভাইজার মনির আমাদের জানিয়েছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়া আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডে কেউ চাকরি করতে চাইলে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হবে। আর নতুন করে কেউ এ চাকরিতে ঢুকতে চাইলে তাকে ৫০ হাজার হাজার টাকা দিতে হবে। এই টাকা না দিলে আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড এ চাকরি করতে পারবেনা।
আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড এর প্রতিনিধি অপারেশনাল ম্যানেজার শামীম শিকদার বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান এখনও বন্দরের দায়িত্বভার গ্রহণ করেনি। যে বা যারা আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড এর নামে পরিচালক বরাবর যে অভিযোগ দায়ের করেছেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। এটা একটা চক্রান্ত। আমরা এখনও বন্দরের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেয়নি। বন্দরে আগের পিমা সিকিউরিটি গার্ড এখনও দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী ১ আগষ্ট নতুন সিকিউরিটি কোম্পানি আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড কাজ শুরু করবে।
এ ব্যাপারে বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সিকিউরিটি আল-আরাফাত সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেড এর নামে যে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে আমরা তদন্ত করে দেখছি আসল ঘটনাটা কি?