গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে মোংলা পৌর শহরে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে পুকুর, রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ী। পানিতে ডুবেছে ঘরে চুলাও। তাই কয়েকদিন ধরে রান্না বন্ধ অনেক পরিবারের। ঘরে পানি উঠায় অনেকে খাট, মাচা ও টোঙ্গের উপর আশ্রয় নিয়েছেন। পৌর শহরের ৯ টি ওয়ার্ডের বেশির ভাগ এলাকাই জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি নামার ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টিপাতে এখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কষ্টে দিন পার করছেন খেটে খাওয়া দিনমজুরেরা।
পৌর শহরের পশু হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা বাহাদুর মিয়া বলেন, রাস্তায় হাটু পানি, ঘরের মধ্যেও পানি। তাই এখন সবাই খাটের উপর থাকছি। রাস্তায় বাচ্চাদের কোমর পানি তাই স্কুলে যেতে পারছেনা।
ভাসানী সড়কের বাবুল ভূইয়া বলেন, পানি নামার কোন ব্যবস্থা নেই, নেই ড্রেনও। তাই এখানকার সব ঘরে পানি। সবাই এখন খাট, মাচা ও টোঙ্গের উপর বসবাস করছে।
খোচেরডাঙ্গা এলাকার জোহরা বেগম বলেন, বাচ্চা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কোন অবস্থা নেই। সব জায়গায় পানি, তারমধ্যে বৃষ্টি তো পড়েছই, থামছেনা।
জয়বাংলা সড়কের জোছনা বেগম বলেন, এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে চুলায় পানি উঠে গেছে। ৪/৫ দিন ধরে চুলায় রান্না বন্ধ। ইট দিয়ে চুলা বানিয়ে কোন রকম রান্না করছি।
জলাবদ্ধতার শিকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে বার বার বললেও কোন কাজ হচ্ছেনা।
এছাড়া উপজেলা ৬টি ইউনিয়নের নিচু এলাকায়ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে বেড়েছে নদীর পানিও। তাই জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে পশুর নদীর পাড়ের ঘরবাড়ী ও রাস্তাঘাট।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা অমল কৃঞ্চ সাহা বলেন, বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি না কমলে এ পানিও কমবেনা। তারপরও পানি নামানোর জন্য পৌর কর্মচারীদের জলাবদ্ধ এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।
মোংলা আবহাওয়া অফিস ইনচার্জ মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন, সাগরে লঘুচাপ ও সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আগামী ৩/৪ দিন ধরেও এ বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। গত ২৪ ঘন্টায় মোংলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১১৩ মিলিমিটার।