বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এর আগে তাকে ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।
বোর্ডের সভাপতি হতে হলে শুরুতে পরিচালক হতে হয়। সেই প্রক্রিয়ায় শুরুতে এনএসসির মনোনয়নে পরিচালক হন সাবেক ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সদ্য পদ হারানো ফারুক আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি।
সূত্র বলছে, ফারুক আহমেদের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট ছিল না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বুধবার (২৮ মে) রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সরাসরি তাকে জানিয়ে দেন, সরকার তাকে বিসিবি সভাপতির পদে দেখতে চায় না। জবাবে ফারুক কিছুটা সময় চেয়েছিলেন, তবে পরদিন তিনি সাফ জানিয়ে দেন, কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া তিনি পদত্যাগ করবেন না। এরপরই প্রকাশ্যে আসে ফারুকের বিরুদ্ধে বিসিবির ৮ পরিচালকের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র। সেটি আমলে নিয়েই ফারুকের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে এনএসসি। তাতে সভাপতির পদও হারান ফারুক।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন—নাজমুল আবেদিন ফাহিম, সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরি, ফাহিম সিনহা, ইফতেখার রহমান মিঠু, মাহবুবুল আনাম, কাজী ইনাম আহমেদ, মনজুর আলম ও সালাহউদ্দিন চৌধুরি। শুধু আকরাম খান ছিলেন এই তালিকায় অনুপস্থিত।
এই পরিস্থিতিতে এনএসসি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে জানায়, বিসিবির গঠনতন্ত্রের ১৩.২ (খ) (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে তার পূর্ণ ঠিকানাও উল্লেখ করা হয়—বাসা নম্বর: ৮, রোড নম্বর: ৭/সি, সেক্টর ৩, উত্তরা, ঢাকা।
ক্রিকবাজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুলবুল বলেন, ‘আমার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন এবং একটি শক্তিশালী ক্রিকেট বোর্ড গঠন করা। আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই না। সরকার আমাকে দায়িত্ব নিতে বলেছে, আমি রাজি হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুযোগ যখন এসেছে, আমি তা কাজে লাগাব। আপাতত মনোযোগ থাকবে আমার বর্তমান দায়িত্ব পালনে। এরপর সরকার চাইলে হয়তো অন্য দায়িত্ব পেতে পারি, কিংবা আবার আইসিসিতে ফিরে যেতে পারি—এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই পদে থাকার পরিকল্পনা আমার নেই।’
আইসিসির ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে আমিনুল বুলবুল দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। এশিয়া অঞ্চলের দায়িত্বে থেকে আফগানিস্তান, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভুটান, থাইল্যান্ড, ইরান ও চীনের মতো দেশে ক্রিকেট উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। কোচিং, গ্রাসরুট প্রোগ্রাম, ক্রিকেট প্রশাসন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে তার নেতৃত্ব প্রশংসিত।
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় আমিনুল ইসলাম বুলবুলের। ক্যারিয়ারে ১৩ টেস্ট খেলে ৫৩০ রান করেন তিনি। সেঞ্চুরি রয়েছে একটি। শতকটি হাঁকিয়ে ইতিহাস গড়েন বুলবুল। বনে যান টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান।
আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে ৩৯ ম্যাচ খেলে ৭৯৪ রান করেন বুলবুল। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ২টি ফিফটির সঙ্গে একটি সেঞ্চুরি রয়েছে সাবেক এই ক্রিকেটারের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৭৫ ম্যাচ খেলে ১৫১৪ রান করেছেন বুলবুল। ফিফটি ৭টি।