বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা কার্যকরভাবে চালু করতে পারায় দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার। শুক্রবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।
লরেন ড্রেয়ার বলেন, “আমরা বিশ্বের ১৫০টি দেশ ও অঞ্চলে কাজ করি। কিন্তু এতো দ্রুত, দক্ষ ও সুশৃঙ্খল সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগে দেখিনি। স্পেসএক্স-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা ভবিষ্যতে ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।”
অধ্যাপক ইউনূসও সফরের জন্য স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “এখন বর্ষাকাল, দেশের চারপাশে সবুজে ভরা দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ। তবে বন্যা ও জলাবদ্ধতার বাস্তবতাও রয়েছে। ফলে নির্ভরযোগ্য কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি জানান, পার্বত্য ও দুর্গম এলাকার উন্নত কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করতে সরকার ১০০টি স্কুলে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটাল করার উদ্যোগও জোরদার করা হচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষ যাতে ঘরে বসেই চিকিৎসা নিতে পারেন, তার জন্য আমরা ডিজিটাল হেলথ সেবা চালু করছি। এর মাধ্যমে নারীদের গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ সহজ হবে এবং স্বাস্থ্য ইতিহাস সংরক্ষণের সুবিধাও থাকবে।”
প্রবাসীদের দিকেও ইঙ্গিত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অনেক প্রবাসী ভাষাগত সমস্যার কারণে বিদেশে চিকিৎসকের কাছে যেতে দ্বিধাবোধ করেন। কিন্তু ডিজিটাল হেলথ সেবার মাধ্যমে তারা দেশের ডাক্তারদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে পরামর্শ নিতে পারবেন।”
লরেন ড্রেয়ার অধ্যাপক ইউনূসের উদ্যোগকে বৈশ্বিক পর্যায়ে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আপনি যে উদাহরণ তৈরি করছেন, তা আমরা বিশ্বের অন্যান্য নেতাদের সামনে তুলে ধরবো। বলবো—অধ্যাপক ইউনূস যদি নিজের দেশে এসব করতে পারেন, তবে অন্যরাও পারবেন।”
তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অধ্যাপক ইউনূসের অবস্থানের প্রশংসা করে বলেন, “প্রযুক্তির মাধ্যমে সেবা বিকেন্দ্রীকরণ ও সুশাসন নিশ্চিতের উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী। বিভিন্ন দেশে ঘুরে আমি জানি দুর্নীতি কতটা বড় প্রতিবন্ধক হতে পারে। আপনি যেভাবে সরকারি সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।”
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্পেসএক্সের গ্লোবাল এনগেজমেন্ট কনসালট্যান্ট রিচার্ড গ্রিফিথস, বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এবং বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।