দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার সময়ের দাবি– মিয়া গোলাম পরওয়ার

ডুমুরিয়ার উলা মাজিদিয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসায় ঈদ সমাবেশ

38

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামের আমীর জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।

জন আকাঙ্খা পূরণ ও দেশের স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে জামায়াতে ইসলামী প্রয়োজনে যেকোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্যে যেতে রাজি আছে। তিনি বলেন, দেশের আদর্শ ও মূল্যবোধকে যাতে কেউ ধ্বংস করতে না পারে সে জন্য দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা করে একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির কাজ চলছে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও কুরবানির বিনিময়ে অর্জিত সফলতা ধরে রখতে হলে ফ্যাসিবাদীদের বিচার ও সংস্কার ত্বরান্বিত করতে হবে।

তাই ইতিবাচক ধারায় দেশের রাজনীতিকে নিয়ে যেতে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে। সোমবার (১৬ জুন) বিকেলে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় উলা মাজিদিয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদ সমাবেশে প্রধান অতিখির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মুখতার হুসাইনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সী মঈনুল ইসলাম ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস। সমাবেশে বক্তৃতা করেন উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান ও গাজী সাইফুল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, হিন্দু কমিটির ডুমুরিয়া উপজেলা সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, সাহস ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আব্দুল হান্নান, হিন্দু কমিটির উপজেলা সেক্রেটারি দেব প্রসাদ, স্বদেশ হালদার, যুব বিভাগের সেক্রেটারি বি এম আলমগীর হোসাইন, ছাত্রশিবিরের দক্ষিণ শাখার সভাপতি আবু তাহের, আব্দুল হাকিম, কামরুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, নির্বাচন সামনে আসলে রাজনীতিতে অনেক মেরুকরণ হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। আমরা চাই দেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম না হোক।

ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার সময়ের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যেভাবে মানুষ হত্যা করেছে, তার বিচার এ সরকারের অধীনে হওয়া উচিত। দেশের সব সেক্টরে সংস্কার প্রয়োজন। তবে নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সেসব সেক্টরে অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় আরেকটি ফ্যাসিস্ট হাসিনা তৈরি হবে। সরকারের কাছে আমাদের কয়েকটি প্রস্তাব জানানো হয়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিনিধি নির্বাচিত করে ক্ষমতা হস্তান্তর করা দরকার। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করার দাবি জানানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়নের জন্য প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে দুটি সমস্যা বিদ্যমান ছিল- এক, ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদ কায়েম হয়েছিল। দুই, দিল্লির তাবেদারি করে হাসিনা দেশ চালিয়েছেন। আমাদের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সচেতন দেশবাসীর কাছে বলতে চাই, আমরা একটি স্বাধীন ভূখন্ড, একটি মানচিত্র পেয়েছি। কিন্তু স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অর্থনীতি ও রাজনীতির নীতিকে হাসিনা ধূলিসাৎ করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল যায়নি, ভোটকেন্দ্রে ভোটাররাও যায়নি। এমনকি এরশাদও নির্বাচনে যেতে চায়নি, ভারত তাকে জোর করে নির্বাচনে পাঠিয়েছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জামায়াতের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও আনুগত্যের ক্ষেত্রে সংগঠনের অনেক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করে মন্তব্য করা এই সংগঠনের ঐতিহ্য নয়। তাই আশা করি, সংগঠনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার্থে সবাই কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে। নিয়মতান্ত্রিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখলে আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন, আল্লাহ আমাদের বিজয় দান করবেন, ইনশাআল্লাহ।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.