দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী কে লাঞ্ছিত ও হয়রানি করার অভিযোগ

23

পাইকগাছা ( খুলনা) প্রতিনিধি:পাইকগাছায় এক ব্যবসায়ী কে লাঞ্ছিত ও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার লতা ইউনিয়নের পানা তেঁতুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকার মঙ্গল ফাল্গুনী দম্পতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী দ্বিজেন্দ্র নাথ হালদার।

অভিযোগে জানা গেছে উপজেলার লতা ইউনিয়নের শিবপদ হালদারের ছেলে দ্বিজেন্দ্র নাথ হালদার পেশায় একজন ব্যবসায়ী ও সমবায়ী। তার বসতবাড়ির পানা তেঁতুলতলা শ্রমজীবী সমবায় সমিতি রয়েছে। যার সম্পাদক দ্বিজেন্দ্র।

সমিতির ঋন ও সঞ্চয়ের টাকা ফেরত নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় সমিতির সদস্য পাশ্ববর্তী তেঁতুলতলা গ্রামের মঙ্গল বিশ্বাসের ছেলে ফাল্গুনী সরকারের। সমিতিতে ফাল্গুনীর ৬৫০ টাকা সঞ্চয় জমা রয়েছে। এর বিপরীতে ঋন নেওয়ার জন্য ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে ফাল্গুনী সমিতিতে গিয়ে দ্বিজেন্দ্রের কাছে ১০ হাজার টাকা ঋন চাই।

জামানত হিসেবে প্রয়োজনীয়( চেক স্টাম্প) কোন কিছু দিতে রাজি না হওয়ায় ফাল্গুনীর ঋন পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এসময় ফাল্গুনী ঋনের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে তার সঞ্চয় এবং ভর্তি ফি টাকা ফেরত চাই। ভর্তির একশো টাকা ফেরত হয় না বললে দ্বিজেন কে হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক পাশ বই নিয়ে ফাল্গুনী গালিগালাজ করতে করতে সমিতি কার্যালয় থেকে চলে যায়।

এরপর বিকাল ৫টার দিকে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিবেশীর দোকানে সামনে ফাল্গুনী ও তার স্বামী মঙ্গল দুজনে মিলে প্রকাশ্যে লোকজনের সামনে মারপিট ও লাঞ্ছিত করে। এঘটনায় দ্বিজেন বাদি হয়ে মঙ্গল ফাল্গুনী দম্পতির বিরুদ্ধে পরের দিন ১৯ সেপ্টেম্বর থানায় লিখিত অভিযোগ করে। এর পরের দিন ফাল্গুনী বাদি হয়ে দ্বিজেন্দ্র নাথ হালদারের বিরুদ্ধে থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন।

এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করছে। অনেকেই বলছেন মাত্র একশো টাকার ঘটনা শুধু রেষারেষির কারণে এতদূর গড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে সমিতির কর্মী নয়ন মন্ডল বলেন যখন সঞ্চয়ের টাকা ফেরত নিয়ে তর্কতর্কি হয় আমি তখন সমিতি ঘরে উপস্থিত ছিলাম, এখানে কথা কাটাকাটি ছাড়া আপত্তিকর কোন কিছুই ঘটেনি। বিশ্বনাথ হালদার বলেন আমরা অনেকেই তখন পাশে ছিলাম ফাল্গুনী যে অভিযোগ করেছে তা আদৌ সঠিক নয়।

উর্মিলা হালদার বলেন আমাদের বাড়ির সাথেই সমিতি ঘর, এখানে সবসময় লোকজন থাকে দ্বিজেনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পাশের দোকানদার গৃহবধূ মুক্তা বলেন ঘটনার দিন আমার দোকানের সামনে দ্বিজেন, ফাল্গুনী ও তার স্বামী মঙ্গল এর মধ্যে ঝগড়া হয়। এলাকার বয়স্ক গুরপদ সরকার বলেন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে আপত্তিকর অভিযোগ করছে। ইউপি সদস্য বিজন বলেন দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি টাকা, স্বর্নলংকার ছিনতাইয়ের যে অভিযোগ করছেন এগুলোর ভিত্তি কম, মূলত রেষারেষির কারণে বিষয় টি অনেক দূর গড়িয়েছে।

ব্যবসায়ী দ্বিজেন্দ্র নাথ হালদার বলেন মূলত ভর্তি ফির একশো টাকা নিয়ে ফাল্গুনীর সাথে আমার কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ফাল্গুনী ও তার স্বামী মঙ্গল রাস্তার উপর আমাকে লাঞ্ছিত ও মারপিট করে। এ ঘটনায় আমি তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলে তারা আপত্তিকর অভিযোগ এনে পরের দিন থানায় পাল্টা অভিযোগ দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে। এ প্রসঙ্গে ফাল্গুনী সরকার মারপিট ও লাঞ্ছিত করার কথা স্বীকার করে বলেন আমাকে লোন দেওয়ার কথা বলে দ্বিজেন আমাকে সমিতির সদস্য করে। পরে ঋন না দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করায় তাকে মারপিট ও লাঞ্ছিত করতে বাধ্য হই। তবে দ্বিজেন থানায় অভিযোগ না করলে আমি তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতাম না বলে তিনি জানান। এঘটনায় উভয় পক্ষের দুটি অভিযোগ পেয়েছি বলে জানিয়েছেন থানার এসআই আব্দুল হালিম।

Leave A Reply

Your email address will not be published.