দক্ষিণ কোরিয়ায় অপ্রত্যাশিত ও রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে চরম দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রবল বর্ষণে এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে ১,৩০০-র বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির সরকার আবহাওয়া সংক্রান্ত বিপর্যয়ের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।
মৃতদের মধ্যে দুইজনের বয়স ছিল ৮০-এর বেশি। তাদের মধ্যে একজন বাড়ির বেজমেন্টে জমে থাকা পানি সরানোর সময় দুর্ঘটনায় পড়েন। আরেকজন মারা যান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। তৃতীয় ব্যক্তি একটি দেয়াল ধসে গাড়ির উপর পড়ে প্রাণ হারান, কয়েক মিনিট আগে তিনি স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছিলেন যে তার গাড়ি পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিওসান শহর, যেখানে মাত্র ১২ ঘণ্টায় ৪০০ মিমি’র বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর এই ঘটনাকে “এক শতাব্দীর মধ্যে একবার ঘটে”—এমন দুর্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেছে। গওয়াংজু শহরে ৪২৬ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গওয়াংজুর এক ক্যাফে মালিক কিম হা-মিন বলেন, “এই এলাকায় কোনো নদী বা খাল নেই, তাই এমন বন্যা কখনও দেখিনি। এখন ব্যবসাও বন্ধ রাখতে হয়েছে।” তিনি জানান, পানি সরিয়ে ফেলার পরও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার দুর্গন্ধে ক্যাফে খোলা যাচ্ছে না।
দেশব্যাপী আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজন হাইপোথার্মিয়ায় ভুগছেন এবং দুইজনের পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিমের শুষ্ক বায়ু ও দক্ষিণের গরম আর্দ্র বায়ুর সংঘাতে বড় আকারের মেঘমালা তৈরি হয়েছে, যার ফলেই এই ভারী বর্ষণ।তবে আগামী সপ্তাহে তীব্র গরম ও সম্ভাব্য দাবদাহ ফেরার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে নদী তীর, পাহাড়ি ঢাল ও নিচু এলাকা থেকে দূরে থাকার জন্য, কারণ এখনও ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি রয়ে গেছে।