দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নই সিস্টেম পরিবর্তনের ভিত্তি: সাতক্ষীরার সেমিনারে বক্তারা

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে তা হবে জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে গাদ্দারি

83

দেশে স্থায়ী গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলেছেন, এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন না হলে দেশে পুনরায় স্বৈরাচারের উত্থান ঘটতে পারে, যা হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঙ্গে চরম শ্বাসঘাতকতা।

দেশে আর কোনো স্বৈরাচারীর যেন জন্ম না হয়, তা নিশ্চিত করতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তবায়ন অপরিহার্য। এই ঘোষণাপত্রই দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও কাঙ্ক্ষিত সিস্টেম পরিবর্তনের মূল ভিত্তি।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)-এর উদ্যোগে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সাতক্ষীরার নাগরিকদের ভাবনা’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে বক্তারা এই দাবি জানান।

আপ বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় সদস্য আসমা উল হুসনা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের আমলে সাতক্ষীরায় সবচেয়ে বেশি হত্যা, গুম ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে নির্যাতন করে ক্ষমতা ধরে রাখার লোভ রুখে দিয়েছে জুলাই আন্দোলন। অবিলম্বে শেখ হাসিনাসহ ওই সরকারের সকল আমলের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে হবে।

বক্তারা বলেন, “শহীদদের পরিবারগুলো বিচার দেখেই শান্তি পাবে। বিচার বিলম্বিত হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”
জুলাই আন্দোলনের তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, “এই আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট দল বা গোষ্ঠীর ছিল না, এটি ছিল ভ্যানচালক থেকে শুরু করে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মুক্তির আন্দোলন। জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই সাধারণ মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন চাই না, আমরা চাই সিস্টেমের পরিবর্তন।”

বক্তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আর কোনো টালবাহানা নয়। সংবিধান পরিবর্তন করে হলেও জুলাই ঘোষণাপত্রকে আইনে পরিণত করতে হবে। যদি তা না করা হয়, তবে এটি হবে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের সঙ্গে গাদ্দারি। দেশের মেধাবীরা যেন দেশ ছেড়ে চলে না যায় এবং আধিপত্যবাদের রাজনীতির অবসান ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এই ঘোষণাপত্র জরুরি।”

আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য মাসুদ রানার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক নাঈদ আহমাদ। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাহিদ ডাবলু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুক, এবি পার্টির জেলা আহ্বায়ক আবদুল কাদের, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হাসানুর রহমান হাসান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মনজুরুল আলম বাপ্পি, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইমরান হোসেন, বৈষম্যবিরোধী কওমী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মাকছুদুর রহমান জুনায়েদ এবং শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে আরিফুজ্জামান প্রমুখ।

বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। বক্তারা বলেন, জুলাই আন্দোলন কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ছিল না, এটি ছিল গণমানুষের মুক্তির সংগ্রাম। তারা পূর্ববর্তী সরকারের আমলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুম ও নির্যাতনের বিচার দাবি করে বলেন, শহীদদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা যাবে না। দ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের দাবি করেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.