গাজায় মানবিক বিপর্যয় এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে মার্চ মাস থেকে আক্ষরিক অর্থেই একটিও ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে পারেনি। বর্তমানে জর্ডান ও মিশরের সীমান্তে ৬ হাজারেরও বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক অপেক্ষায় থাকলেও, ইসরায়েল অনুমতি দিচ্ছে না—ফলে খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সামগ্রীর মারাত্মক সংকটে ভুগছে গাজাবাসী।
তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এই ত্রাণ আটকে রাখা একটি মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছে। গাজায় প্রবেশের একমাত্র উপায় হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছা।” তিনি আরও বলেন, আকাশপথে ত্রাণ ফেলা ‘অকার্যকর, ব্যয়বহুল এবং বিপজ্জনক’, যা অনিচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষকেই হত্যা করতে পারে।
লাজারিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, “সড়কপথেই দ্রুত ও সম্মানজনকভাবে খাদ্য পৌঁছানো সম্ভব। এটি গাজার মানুষের মানবিক মর্যাদার সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ।” তিনি একইসঙ্গে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন যে হামাস বা অন্যান্য গোষ্ঠী ত্রাণ চুরি করছে। ইউএসএআইডির গবেষণাতেও এমন কোনো ‘পদ্ধতিগত অপব্যবহার’-এর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় লাগাতার হামলা চালাচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গাজায় এই ত্রাণ-অবরোধ এবং পরিকল্পিত অনাহার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও যুদ্ধাপরাধের সীমা অতিক্রম করছে। এখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের নৈতিক দায়বদ্ধতা—এই অবরোধ দ্রুত তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা।