দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

খুলনা-৬ সংসদীয় আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী , বিএনপির একাধিক প্রার্থী মাঠে।

1,233

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খুলনা -৬ (কয়রা -পাইকগাছা) আসনে সম্ভাব্য জামায়াতের একক প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা গণসংযোগ, ঈদ পুনর্মিলনী, সভা সমাবেশসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাদের প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। পাশাপাশি ভোটারদের দোয়াও চাচ্ছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের ইঙ্গিত দিয়েছেন ।যদিও সরকার পতনের পর থেকেই রাজনীতির মাঠে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের মাঝে বেশ আগ্রহ রয়েছে। তবে গত কয়েকমাস ধরে সংসদীয় এলাকায় নির্বাচনী উত্তাপ অনেকটাই বেড়েছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণাও বেড়েছে সংসদীয় এলাকায়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হওয়া ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও জোটের শরিক দলগুলো ছাড়া বিএনপি-জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন।

নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আগেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খুলনা জেলার ছয়টি আসনে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।জামায়াতের দূর্গ হিসেবে পরিচিত কয়রা- পাইকগাছা উপজেলা মিলে গঠিত খুলনা -৬ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য একক প্রার্থী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এর নাম ঘোষণা করা হলেও বিএনপি’র সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী মাঠে নির্বাচনী প্রচারণায় রয়েছেন।
২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চারটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাতে থাকা এ আসনে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনও প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। তবে এ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা একাধিক।
সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন-খুলনা জেলা বিএনপি’র আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম , জিয়ার রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালক আমিরুল ইসলাম কাগজী,ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ- সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, জাতীয়তাবাদী আইন ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ- সভাপতি, বর্তমান যুক্তরাজ্য বিএনপির সদস্য এম,জুবায়ের আহমেদ । খুলনা জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পির অনুসারীরাও তাকে খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান মর্মে অনলাইনে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন।
প্রার্থীরা পৃথক পৃথকভাবে কর্মীসভা, সমাবেশসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। হাট-বাজার রেলস্টেশন, চায়ের দোকানসহ জনবহুল এলাকাগুলোতে ভোটারদের মুখে নির্বাচনের সম্ভাব্য এসব প্রার্থীদের নাম নিয়ে খোশ গল্প চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় সংসদের ১০৪ নম্বর আসন খুলনা -৬ এর নির্বাচনী এলাকা এর আগে জামায়াতের সাথে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর প্রতিদন্দিতা হয়েছে।
নির্বাচন অফিসের সূত্র অনুযায়ী, এ আসনটিতে ১৯৭৩ সাল থেকে ২০০৮সাল পর্যন্ত ৮টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের এম,এ বারী ও ১৯৭৯ সালে মুসলিম লীগের খান এ সবুর নির্বাচিত হন। সীমানা পরিবর্তনের পর ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মোমেন উদ্দিন নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জহুরুল হক এমপি হন। ১৯৯১ সালে জামায়াতের অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের শেখ মো: নূরুল হক,২০০১ সালে জামায়াতের শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস এবং ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সোহরাব হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন।

বিএনপির একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও স্বস্তিতে আছে জামায়াত। দলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে আগেই মনোনয়ন দেওয়ায় সুবিধা হয়েছে প্রচার ও প্রচারনায়। নিয়মিত দলীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি নির্বাচনী তৎপরতাও চালিয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছে বলে জামায়াত দাবি করে।
জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, জনগণ যেভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থন করছে, তাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে বিজয় কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না।
তিনি বলেন, বিনা অপরাধে কয়েক বছর ধরে বাসায় থাকতে পারিনি। বিনা কারণে জেল খেটেছি। তারপরও জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে প্রিয়জন মনে করি। জনপ্রতিনিধি হলে সবাইকে নিয়ে সংসদীয় আসনের উন্নয়নে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ। উপকূলীয় এ অঞ্চলের উন্নয়নে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন তিনি।
৪ লাখ ভোটারের এ আসনে তরুণ ভোটার কয়রা ব্লাড ব্যাংকের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন, বিগত প্রায় দেড় যুগের নির্বাচন আমরা দেখেছি, এবার এমন একটি নির্বাচন চাই যেখানে বিনা বাধায় গোপনীয়তা বজায় রেখে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে সবাই। আর সেটা নিশ্চিত হলে যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে।
জাতীয় মানবাধিকার সংগঠন কয়রা উপজেলা সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন,.নির্বাচন কমিশন দীর্ঘদিন একটি ফ্যাসিবাদী দলের হয়ে কাজ করায় জনগণের আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটেনি।আশা করি এবারের নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে জনগণের ভোগ গ্রহণের সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করবেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.