নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম সপ্তাহ পার হয়েছে। তবুও খুলনায় বই হাতে পায়নি প্রায় ৪ লাখ শিক্ষার্থী। মাধ্যমিকে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণিতে তিন করে বই পাওয়া গেলেও প্রাক (শিশু), চতুর্থ, পঞ্চম এবং মাধ্যমিকের নবম ও দশম শ্রেণির অধিকাংশ শিক্ষার্থী কোন বই পায়নি। পুরোপুরি বই না পাওয়ায় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই আনুষ্ঠানিক বই উৎসবও করতে পারছে না।
খুলনা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, খুলনার প্রাথমিকে বইয়ের চাহিদা ৯ লাখ ৮২ হাজার ২৩৩ কপি। এর মধ্যে পাওয়া গেছে ৪ লাখ ১২ হাজার ৬২০ কপি। চাহিদার এখনও ৪২ শতাংশ বই পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, প্রথম শ্রেণিতে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৫০ কপি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে বই এসেছে ১ লাখ ১২ হাজার ৫০ কপি। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ কপি বইয়ের বিপরীতে পাওয়া গেছে ১ লাখ ৫২৩ কপি বই। তৃতীয় শ্রেণিতে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৭০২ কপি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে ২ লাখ ৪৭ কপি পাওয়া গেছে।
এছাড়া চতুর্থ শ্রেণিতে ৪১ হাজার ৯১৬ জন শিক্ষার্থীর প্রায় ২ লাখ ৪৬ হাজার ৫৮৮ কপি বই ও পঞ্চম শ্রেণির ৩৮ হাজার ৫২০ শিক্ষার্থীর ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কপি বই পাওয়া যায়নি।
একইভাবে মাধ্যমিকে চাহিদার ৪২ লাখ ৫২ হাজার ২৪৪ কপি বইয়ের বিপরীতে পাওয়া গেছে সাত লাখ ৭৬ হাজার ৯০ কপি। মাধ্যমিকে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা ইংরেজি ও গণিত বই পাওয়া গেছে। তাও চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে মোট চাহিদার পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৬৩ কপির মধ্যে পাওয়া গেছে দুই লাখ ১৭ হাজার ১২ কপি। সপ্তম শ্রেণিতে চাহিদা পাঁচ লাখ ১৩ হাজার ৫১৯ বইয়ের মধ্যে পাওয়া গেছে এক লাখ ১৯ হাজার ২৪৫ কপি। অষ্টম শ্রেণিতে পাঁচ লাখ ১৯ হাজার ৩৪২ কপির মধ্যে পাওয়া গেছে এক লাখ ১৯ হাজার ৩২১ কপি। এছাড়া নবম শ্রেণিতে ছয় লাখ ১৭ হাজার ৭৩১ কপি বইয়ের মধ্যে পাওয়া গেছে ৪৫ হাজার ২৭১ কপি ও দশম শ্রেণিতে পাঁচ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৮ কপি বইয়ের মধ্যে পাওয়া গেছে এক লাখ ১৯ হাজার ৪৮৬ কপি। মাদ্রাসা শাখার প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সকল বই পাওয়া গেছে।
কেসিসি কলেজিয়েট গার্লস স্কুলের অষ্টম একজন শিক্ষার্থীর বাবা মনজুরুল আলম বলেন, এখনও অধিকাংশ বই পাওয়া যায়নি। ঠিকমতো শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে পড়ালেখায় মন নেই ছেলে- মেয়েদের। শিক্ষার্থীদের হাতে দ্রুত বই পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
ঢাকা ম্যাচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাহিনুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ে সাত হাজার বইয়ের চাহিদার মধ্যে দুই হাজারের একটু বেশি বই আসছে। সেটা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জামাল হোসেন বলেন, আমাদের মোট বইয়ের বরাদ্দ ৯ লাখ ৮২ হাজার ২৩৩। এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে ৪ লাখ ১২ হাজার ৬২০ কপি। প্রতিদিনই বই আসে। তবে প্রাক প্রাথমিকের বই আসতে একটু দেরি হবে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শামছুল হক বলেন, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই পাওয়া গেছে। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নবম ও দশম শ্রেণির বইও দেওয়া হয়েছে। তবে ইংলিশ ভার্সন, এসএসসি ভোকেশনাল ও ব্রেইল পদ্ধতির কোনো বই আসেনি।