ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ন্যায়-ইনসাফের সমাজ বিনির্মাণে সকলকে জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে—অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান
জামায়াত গণমানুষের কল্যাণ, আদর্শ জাতি গঠন, সুন্দর ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র পরিণত করে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী কোন গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয় বরং জামায়াত বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যতিক্রমী আন্দোলন ও সংগ্রামের নাম। এ জন্যই আমরা ব্যতিক্রম যে, আমরা যে কাজই করি তা আমাদের মনগড়া কোন কাজ নয়।
মূলত আমরা যেসব কাজ করছি সকল ক্ষেত্রে আমরা গাইড লাইন ও দিকনির্দেশনা গ্রহণ করছি পবিত্র কালামে হাকীম ও রাসূল (সা.) সুন্নাহ তথা জীবনাদর্শ থেকে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে হাকীমের সূরা আল ইমরানের ১০৪ নং আয়াতে এরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে অবশ্যই এমন একটি দল থাকবে; যারা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজের নিষেধ করবে। আর এরাই হবে প্রকৃত সফলকাম’। জামায়াত আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সেই নির্দেশনা মোতাবেকই দেশকে একটি আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তিনি বলেন, জামায়াত আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশ অনুসারে একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দল ও ইসলামী আন্দোলন গড়ে তুলেছে।
আর আমাদের উদ্দেশ্য সাময়িক নয়। যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়া বা ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সম্পদ লুট করে নিজেদের আখের গুছিয়ে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাও আমাদের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। রাজনীতিকে নিজেদের জীবন-জীবিকার অনুসঙ্গও আমরা মনে করি না বরং গণমানুষের কল্যাণ ও আর্ত-মানবতার মুক্তিই আমাদের রাজনীতির কাক্সিক্ষত গন্তব্য। তিনি সেই শান্তির সমাজ বিনির্মাণে সকলকে জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করার আহবান জানান। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর থানাধীন ৩ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় মাঠের বাড়ি স্কুল মাঠে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
ওয়ার্ড আমীর সৈয়দ গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জাকির হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ইকবাল হোসেন, দৌলতপুর থানা আমীর মু. মুশাররফ আনসারী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন আইবিডব্লিউএফ এর খুলনা মহানগরী সেক্রেটারি আজিজুর রহমান স্বপন, দৌলতপুর থানা সেক্রেটারী মাওলানা মহিউদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন পারভেজ, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা হাবিবুর রহমান, দৌলতপুর থানা ছাত্রশিবির সভাপতি আবুল কাশেম, দৌলতপুর থানা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ৩ নং ওয়ার্ডের ইউনিট সভাপতিবৃন্দ যথাক্রমে মো. ইউনুস আলী, গোলাম মুসা তুহিন, শরীফ আল মামুন, মেসবাহ উদ্দিন, মুজাহিদ হাওলাদার, দৌলতপুর জুট প্রেস বেলিং ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়ন-১১৫৫ এর সভাপতি আব্দুল খালেক হাওলাদার, ১ নং ওয়ার্ড আমীর রেজাউল কবির, জামায়াত মুজাহিদুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা কামরুল ইসলাম, সিদ্দিক জমার্দার, শহিদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল হাকিম, মাসুদ রানা, মালেক মুন্সী প্রমুখ।
খুলনা মহানগরী আমীর আরও বলেন, শোনার ভিতরে কল্যাণ নাই। এখন মানার ভিতরে হল কল্যাণ। আসুন আমরা আগে নিজেদের ভিতরে পরিবর্তন আনি। আমরা যদি আমাদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারি, নিজেদের গড়ে তুলতে পারি আল্লাহর সৈনিক হিসাবে, জিন্দেগির মুমিন হিসাবে, তাহলে এই সমাজের পরিবর্তন আসবে। আর সমাজের পরিবর্তন আসলেই আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম হওয়ার পথ সুগম হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, জমি আল্লাহর, মানুষ আল্লাহর। এই আল্লাহর মানুষগুলোকে পরিচালিত করতে হবে আল্লাহর দ্বীন অনুযায়ী। হুকুম দেওয়ার অধিকার, বিধান দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহর। তাদেরকে পরিচালিত করতে হবে আল্লাহর বিধান দিয়ে। মানবরচিত কোন বিধান দিয়ে পরিচালনা করার কোন সুযোগ নেই। আমরা যারা আছি সেই দ্বায়িত্ব পালন করতে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে। আমাদের আরও অন্যতম পরিচয় হল সর্বশেষ নবী হযরত মোহাম্মদ রাসুলুল্লাহ (সা.) -এর উম্মত। একমাত্র কুরআনের মাধ্যমে আমরা যে স্বপ্ন দেখি, সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশের। কুরআনের বাংলাদেশ হিসেবে যদি আমরা এই বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য ময়দানে আসতে পারি। তবেই আমরা সেই বাংলাদেশ পেতে পারি।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থা ইসলামী হুকুমত হলে কারও অধিকার নিয়ে আর আন্দোলন করতে হবে না। সমাজে বৈষম্য অটোমেটিক দূর হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে শান্তি ফিরে আসবে। এ জন্য দরকার একদল সৎ, ন্যায়পরায়ণ, আল্লাহভীরু সোনার মানুষ। আর সেই সোনার মানুষ তৈরিতে কাজ করছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ।
আজিজুল ইসলাম ফারাজী বলেন, দেশমাতৃকার কল্যাণে সকল বিভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট রেখে আমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, জামায়াতে ইসলামী দেশের সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনৈতিক দল, আল্লাহর অশেষ রহমতে দলটি আজও টিকে আছে এবং দেশবাসীর মুক্তির সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।#