জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনের বিরুদ্ধে নয়, বরং পরিকল্পিত অপপ্রচারের শিকার—এমন দাবি তুলেছেন দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। বৃহস্পতিবার (২২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, কিছু মহল সচেতনভাবে এনসিপিকে ‘নির্বাচনবিরোধী’ সাজিয়ে নেতিবাচক ইমেজ তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, “ছাত্র উপদেষ্টারা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকতে চান”—এমন গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অপপ্রচার চলছে একাধিক দিক থেকে। অথচ, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম নির্বাচনী অবস্থান স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন—ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন মেনে নিলেও, এর আগে বিচার ও সংস্কার জরুরি।
একই সুরে ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও ১০ মে বলেন, “ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবেই।” তিনি একাধিকবার প্রকাশ্যে দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তবে এসব সত্ত্বেও ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও আন্দোলনকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন হাসনাত। তিনি বলেন, “যাঁরা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরাই যদি ইন্টারিম সরকারের অংশ হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের পদত্যাগের দাবি যৌক্তিক নয়।”
পোস্টে আরও উঠে আসে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ। হাসনাত লেখেন, “আমাদের অবচেতনেই যেন সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সালিশের ভূমিকায় দেখতে চাওয়া একধরনের প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। অথচ বিএনপি তার ইতিহাসে সেনা হস্তক্ষেপের শিকার একটি দল। ওয়ান-ইলেভেন আর তারেক রহমানের নির্যাতনের কথা আমরা এখনও ভুলিনি।”
তবে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় ভূমিকাকে স্বীকার করেই তিনি বলেন, “স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনী আমাদের আস্থার প্রতীক। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ব, তবে রাজনৈতিক সালিশের জন্য নয়।”
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যারা পাশে ছিল, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আক্ষেপ করে লেখেন, “বিচারের প্রশ্নে বড় দলগুলোর নির্লিপ্ততা আমাদের হতাশ করে।”
সবশেষে তিনি আহ্বান জানান, “গণতন্ত্র চর্চা, আওয়ামী লীগের বিচার এবং কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করে দ্রুত নির্বাচনের পথে একসঙ্গে হাঁটতে হবে। স্বল্পমেয়াদি লাভের আশায় ঐতিহাসিক সুযোগ হারালে, তা হবে জাতির জন্য বড় ব্যর্থতা।”