দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

একবছর পেরিয়ে গেলেও এখনো দেশে দুর্নীতি, বৈষম্য, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও ফ্যাসিবাদী আচরণ থেকে জনগণ মুক্তি পায়নি —অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খুলনা মহানগরী জামায়াতের গণমিছিল

18

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, একটি শ্রেণি দেশে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে। এর দায় আমরা নির্দিষ্ট কোন দলকে দিতে চাইনা।

আগামী নির্বাচনে এই চাঁদাবাজদের জনগণ প্রত্যাখান করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকই আমাদের কাছে সম্মানিত। জামায়াতে ইসলামী জনগণের সম্মান ও অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমাতায়। অথচ প্রশাসন বিভিন্ন দলকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।

তিনি প্রশাসনকে কোন দলের পক্ষাবলম্বন না করে জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, আমরা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় করি না। আমরা সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমৃত্যু সংগ্রাম করে যাবো। জুলাই আন্দোলনের মূল দাবি ছিল একটি বৈষম্যহীন ন্যায় ইনসাফ ভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বলেন, ইসলামী আদর্শ ছাড়া দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন দেশ গঠন সম্ভব নয়। একবছর পেরিয়ে গেলেও এখনো দেশে দুর্নীতি, বৈষম্য, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও ফ্যাসিবাদী আচরণ থেকে জনগণ মুক্তি পায়নি। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) বিকেলে মহানগরীর ডাকবাংলো সোনালী ব্যাংক চত্বরে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জুলাই-২৪ গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও অধ্যক্ষ গ্ওাসুল আযম হাদী, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক, মাওলানা শেখ মো. অলিউল্লাহ, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, আ স ম মামুন শাহীন, ইঞ্জিনিয়ার মোল্লা আলমগীর, মীম মিরাজ হোসাইন, মোকাররম বিল্লাহ আনসারী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও সেক্রেটারি রাকিব হাসান, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহিদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, দৌলতপুর থানা আমীর মুশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমীর মনোয়ার আনসারী, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর, লবণচরা থানা আমীর মোজাফফর হোসেন, ব্যবসায়ী থানা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সেক্রেটারি আজিজুর রহমান স্বপন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগরী সাধারণ সম্পাদক ডা. সাঈদুজ্জামান, আব্দুস সালাম, জাহিদুর রহমান নাঈম, আব্দুল আউয়াল, মো, মহিউদ্দীন, শেখ তুহিন, এডভোকেট ব ম মনিরুল ইসলাম, শাহ মাহমুদুল হাসান জিকু প্রমুখ। পরে এক বিশাল গণমিছিল সোনালী ব্যাংক চত্বর থেকে ফেরীঘাট মোড় ও পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

মহানগরী আমীর আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের এদিনে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে শাসকের মোড়কে জড়িয়ে থাকা এক দানবের পতন হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদে চেপে বসা ১৬ বছরের স্বৈরাচারের অবসান হয়। পরবর্তীতে ৫ আগস্টকে গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয় সরকার। কোটা সংস্কার দাবিতে গত বছর ১ জুলাই শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেপরোয়া গুলি, গণগ্রেফতার এবং নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা ও সংঘর্ষ একপর্যায়ে সরকার পতনের একদফা দাবিতে রূপ নেয়। আন্দোলনটা কোটা দিয়ে শুরু হলেও তা শেষ হয় হাসিনার পতনে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট কারফিউ ভেঙে গণভবন অভিমুখে লাখো মানুষের ঢল নামলে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সারাবিশ্বে এই আন্দোলন জুলাই গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিতি পায়। এরপর ৬ আগস্ট দুপুরে বঙ্গভবন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এক তরফাভাবে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একচ্ছত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেন শেখ হাসিনা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.