বিশ্ব যেন ফিরে যাচ্ছে এক নতুন স্নায়ুযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে! ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের টান টান উত্তেজনা আবারও শিরোনামে—এবার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “যেকোনো চুক্তিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ একেবারেই চলবে না”—এটিই আমেরিকার ‘রেডলাইন’।
রোববার এবিসির আলোচিত অনুষ্ঠান ‘দিস উইক’–এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উইটকফ বলেন, “আমরা ১ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণও সহ্য করব না।” এই কঠিন বার্তা যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে।
দ্রুতই জবাব আসে তেহরান থেকে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ক্ষোভ ঝাড়েন, “এই দাবি অবাস্তব। আলোচনা থামিয়ে দিতে হলে এমনটাই করতে হয়। ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ হওয়ার প্রশ্নই আসে না।” তাসনিম নিউজ জানায়, আরাগচি এই বক্তব্যকে পুরোপুরি ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন’ বলে অভিহিত করেছেন।
একদিকে ওয়াশিংটন বলছে, সমৃদ্ধকরণ থামাও, অন্যদিকে তেহরান জানিয়ে দিল, ‘চলবে, থামবে না’। স্পষ্টতই, পারমাণবিক চুক্তির পথে দুই পক্ষের মাঝে যেন দাঁড়িয়ে আছে এক অদৃশ্য পরমাণু পর্বত।
তবে উত্তপ্ত বাক্যযুদ্ধের মাঝেও উইটকফ আশার আলো দেখাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই ইউরোপে আবারও আলোচনায় বসতে পারেন দুই দেশের প্রতিনিধি। তাঁর আশা, এবার অন্তত কিছু ‘ইতিবাচক ফল’ আসবে।
আরাগচিও জানান, নতুন আলোচনার সময় ও স্থান খুব শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন, “আমরা ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির একেবারে দ্বারপ্রান্তে।” কিন্তু পরদিনই তার কণ্ঠে ধরা পড়ে চাপের সুর—“ইরানকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে বিশ্ব যেন দাঁড়িয়ে রয়েছে এক অনিশ্চয়তা ও উত্তেজনার দোলাচলে। সমঝোতা হবে, নাকি আরও একধাপ এগিয়ে যাবে সংঘাত—উত্তরের অপেক্ষায় গোটা পৃথিবী।