দেশের সরবরাহব্যবস্থার দুটি স্তরে ইন্টারনেটের দাম ১০ থেকে ২০ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে একাধিক প্রতিষ্ঠান। তবে প্রশ্ন উঠেছে, গ্রাহকরা এই মূল্যহ্রাসের সরাসরি সুফল কতটা পাবেন।
প্রথমে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) ২২ মার্চ সব ধরনের সেবায় ১০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দেয়। এরপর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোম আন্তর্জাতিক ও জাতীয় স্তরে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম কমানোর সিদ্ধান্ত জানায়। সর্বশেষ ২২ এপ্রিল সামিট কমিউনিকেশনসও নিজেদের সেবায় ১০-২০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে।
অপারেটররা বলছে, ইন্টারনেটের দাম নির্ভর করে একাধিক খরচের ওপর। ব্যান্ডউইথের দাম কমলেও সরাসরি গ্রাহক পর্যায়ে বড় পরিবর্তন আসবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আইআইজি ও এনটিটিএন স্তরে ব্যান্ডউইডথ সংগ্রহ করে, সেখানেই এই ছাড় কার্যকর হবে।
সরকারি নীতিগত সহায়তার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বিভিন্ন স্তরে দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়ায় মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের মূল্য কমাতে আর কোনো অজুহাত নেই।
আইএসপিদের সংগঠন আইএসপিএবি জানায়, তারা এখন ৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে, যা আগে ছিল ৫ এমবিপিএস। তবে অন্যান্য গতি বা দামের স্তরে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
আইএসপিএবির সভাপতি মো. ইমদাদুল হক মনে করেন, গ্রাহকদের প্রকৃত সুফল পেতে বিটিআরসির রাজস্ব ভাগ কমানো প্রয়োজন। তার ভাষায়, বর্তমানে প্রতি এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথের বিক্রয়মূল্য ২০০ টাকা হলেও রাজস্ব নির্ধারণ করা হয় ৩৬৫ টাকা ধরে। সুতরাং, ঘোষণা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হলে গ্রাহকরা সুফল পেতে পারেন।
মোবাইল অপারেটরদের দিক থেকে গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, ইন্টারনেটের দাম নির্ভর করে তরঙ্গ, টাওয়ার, ফাইবার, বিদ্যুৎসহ নানা খরচের ওপর। বিষয়টি সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, খরচ কমার সঙ্গে সঙ্গে সময়ের ব্যবধানে ইন্টারনেটের মূল্যও কমে আসবে। তবে শুধু ঘোষণা নয়, কার্যকরভাবে দাম কমানোর ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক রয়েছে ১১ কোটি ৬০ লাখ এবং ব্রডব্যান্ড গ্রাহক ১ কোটি ৪০ লাখ। তাই এই দাম কমানোর উদ্যোগের প্রকৃত সুফল কত দ্রুত সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছায়, তা সময়ই বলে দেবে।