প্রায় ৩ বছর ধরে যুদ্ধে জড়িয়ে আছে রাশিয়া ইউক্রেন। তবে এবার শেষ দেখতে চান পুতিন, ট্রাম্প। আর সে জন্যই সৌদি আরবের জেদ্দায় শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনের সঙ্গে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ইউক্রেন ইতোমধ্যে এই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। এখন এই প্রস্তাব রাশিয়ার কাছে তুলে ধরা হবে। খবর বিবিসির।
সৌদি আরব সফরকালে ইউক্রেনের ডেলিগেটরদের সাথে বৈঠক শেষে একটি সংবাদ সম্মেলনে মার্কো রুবিও জানান, যুক্তরাষ্ট্র একটি অন্তর্বর্তীকালীন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। ইউক্রেন এতে সম্মতি জানিয়েছে এবং এটি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিতে বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে শুধুমাত্র রাশিয়া যদি একে মেনে নেয়।
রুবিও বলেন, “বল এখন রাশিয়ার কোর্টে। তারা সম্মত হলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, না হলে বাধা কোথায় তা বোঝা যাবে।” তিনি আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে, এবং তিনি চান রক্তপাত শেষ হোক।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেন, আলোচনায় মূলত যুদ্ধ কীভাবে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিশ্চিতে কী ধরনের গ্যারান্টি প্রয়োজন তা নিয়েও কথা হয়েছে।
তিনি জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তিনি রুশ নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। অন্যদিকে, মার্কো রুবিও জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রুবিওকে জিজ্ঞাসা করা হয়, যুদ্ধবিরতি শুধু আকাশ ও সমুদ্রপথে সীমাবদ্ধ থাকবে কি না। জবাবে তিনি স্পষ্ট করেন, “না, পুরো যুদ্ধক্ষেত্রেই গুলি বন্ধ থাকবে।”
তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ কেবল আলোচনার মাধ্যমেই শেষ হতে পারে। আর আলোচনার জন্য প্রথম শর্ত হলো—যুদ্ধ থামানো।”
রুবিও বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে এবং আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। এখন রাশিয়া কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটিই দেখার বিষয়।”
তবে রাশিয়া যদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে “শান্তির পথে প্রধান বাধাটি পরিষ্কার হয়ে যাবে”, বলে মন্তব্য করেন মার্কো রুবিও।
সংবাদ সম্মেলনে রুবিওকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন ইউক্রেনের সঙ্গে দুর্লভ খনিজ সম্পদের বিষয়ে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। তিনি জানান, এই আলোচনার মূল বিষয় ছিল যুদ্ধবিরতি। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
সংবাদ সম্মেলনের পর মার্কিন প্রতিনিধি দল সৌদি আরবে ইউক্রেনের শান্তি আলোচনা সংক্রান্ত বৈঠক শেষ করে। এখন নজর থাকবে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ার দিকে—তারা কি সত্যিই শান্তির পথে এগিয়ে আসবে, নাকি যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হবে। তবে পুতিন এর মধ্যেই গত সপ্তাহে বলেছেন, যুদ্ধবিরতিতে রাজি তিনি।