আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে—ইউক্রেনের দুটি অঞ্চল সম্পূর্ণ রাশিয়ার দখলে থাকবে এবং আরও দুটি আংশিক দখলকৃত অঞ্চলে রুশ সেনাদের অবস্থান বহাল থাকবে।
সূত্র অনুযায়ী, পুতিন চান ইউক্রেন দনবাস অঞ্চল ছেড়ে দিক। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক প্রদেশ নিয়ে গঠিত এই অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাতের মূল কেন্দ্র। ট্রাম্পও এ বিষয়ে পুতিনের পরিকল্পনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।
শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর শনিবার (১৬ আগস্ট) ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও কয়েকজন ইউরোপীয় শীর্ষ নেতার সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেন। আলোচনায় তিনি পুতিনের এই প্রস্তাবের কথা তোলেন। তবে জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ইউক্রেনের সংবিধান কোনো ভূখণ্ড ছাড়ার অনুমতি দেয় না। তার ভাষায়, “দনবাস ছাড়ার প্রশ্নই আসে না।” যদিও সম্ভাব্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনার দ্বার খোলা রাখার ইঙ্গিত দেন তিনি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ইউরোপীয় দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনের কিছু অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন পুতিন এবং ট্রাম্পও এতে সম্মতি জানিয়েছেন। অপরদিকে দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, পুতিন ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেছেন—তার শর্ত পূরণ হলে রুশ সেনারা আর অগ্রসর হবে না। পরে ট্রাম্পও ফোনালাপে জেলেনস্কিকে একই বার্তা পৌঁছে দেন।
এএফপির খবরে বলা হয়, মস্কোর দাবি মেনে নিলে খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে রুশ বাহিনী আর এগোবে না। এতে ওই এলাকায় আংশিক যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে পুতিনের চূড়ান্ত অবস্থানের ওপর।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েক মাস পর রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল দখলের দাবি তোলে। বর্তমানে লুহানস্কের প্রায় সব এলাকা ও দোনেৎস্কের অধিকাংশ রাশিয়ার দখলে থাকলেও খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়ার মূল নগরীগুলো এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়।