অমর একুশে বইমেলায় ছাত্র-জনতার গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছবি সম্বলিত ডাস্টবিন নিয়ে তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। স্বৈরাচর মুক্ত নতুন বাংলাদেশে ঘৃণিত-খুনিদের যথাস্থানে জায়গা দেয়ায় প্রশংসা করেছেন মেলায় আসা সাধারণ দর্শনার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই আইডিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
অন্যদিকে একজন ফ্যাসিস্ট-গণহত্যাকারীর প্রতি মানুষের এই ঘৃণা সইতে পারছেন না সমাজের সুশীলবেশী আওয়ামী লীগের দোসরারা। হাসিনার ডাস্টবিনের ছবি ভাইরাল হতেই চলছে তাদের মায়াকান্নার রোল। ২ হাজার শহীদ ও অর্ধ লক্ষ পঙ্গু ছাত্র-জনতার প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র সহানুভুতি না থাকলেও একজন গণহত্যাকারী, লুটপাট, আয়নাঘরে কারিগরের প্রতি তাদের মায়ার শেষ নেই।
গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক একুশে বইমেলা। সেখানে ডাস্টবিনের উপরে ব্যবহার করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে ঘৃণা সম্বলিত ছবি। আর তাতেই যেন ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ফ্যাসিবাদের দোসররা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে অনেকেই সুশীলগিরি দেখাচ্ছেন। তারা কেন যেন ভুলে গেছেন শাহবাগীদের দ্বারা খালেদা জিয়াকে ব্যাঙ্গ করার ঘটনা। সেসময় হয়তো তাদের মুখে কুলুপ ছিল- এমন সব মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা।
সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ গণহত্যার দোসরদের কড়া জবাব দিয়ে লিখেছেন, ইসলাম ও হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর শক্র ঘৃণিত আবু জাহেলের বাড়িকে হাজীদের জন্য টয়লেট বানানো হলে একজন নৃশংস খুনির ছবি ডাস্টবিনে দেয়াতে সমস্যা কোথায়? আর কারাই বা দেখছেন এই সমস্যা? এটা বুঝতে রকেট সায়েন্স জানা লাগে না।
বইমেলার প্রথম দিনে বাংলা একাডেমিতে স্থাপন করা হাসিনার ছবিযুক্ত ডাস্টবিনে ময়লা ফেলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়লা ফেলার সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন শফিকুল আলম। এরপর থেকেই শুরু হয় আলোচনা।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন প্রেস সচিবের ওই পোস্টের স্ক্রিনশট জুড়ে দিয়ে গণঅভ্যুত্থান নিয়ে কটাক্ষ করেন। এনিয়ে তোপের মুখে পড়েন হাসিনার এই দোসর।
ডাস্টবিনের সমালোচকদের উদ্দেশ্যে প্রবাসী অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, একটা খুনী, সাইকোপ্যাথ মহিলা — যে কিনা হাজার হাজার মানুষকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে, ৩০ বছরের উপরে হয়ে যাওয়ার পরও বাংলাদেশের কোটি তরুণ ভোট দিতে পারেনি গত ১৬ বছর, প্রতিটি পদে পদে মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে, দেশটাকে যাতে ইন্ডিয়া বেশ্যার মত ব্যবহার করে সেটা নিশ্চিত করেছে– তার ছবিওয়ালা ডাস্টবিনে ময়লা ফেললে রুচির দুর্ভিক্ষ হয়ে যায়?
বাহ! হাসিনার ফ্যাসিজম এনাবলারদেরকে আজকে আবারো চেনা গেলো! হাজারটা মানুষ খুন করলেও যাদের কোন প্রতিবাদ নাই, আজকে ওই ফ্যাসিস্টের জুতামারা ছবির ডাস্টবিনে টিস্যু ফেলতেই তাদের শিয়ালের মতো হুক্কা হুয়া শুরু!
মোবাশির ইউসা নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, হুমায়ূন আহমেদ নিজের বড় মেয়ের বান্ধবী শাওনকে দ্বিতীয় বিয়ে করার পরও বুঝতে পারেননি কত বড় ভুল তিনি করে ফেলছেন! যে হুমায়ূন সারাজীবনে কোনো সরকার, কোনো নেতা, কোনো দলকে তেল দিয়ে চলেননি, সেই হুমায়ূনের দ্বিতীয় বউ মেহের আফরোজ শাওন আম্লীগের পতনে পাগলের মত হয়ে গেছে। একুশে বইমেলার ডাস্টবিনে হাসিনার ছবি লাগানোর কারণে শাওনের পাছার লোম জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। সেই ডাস্টবিনের ছবি শেয়ার করে শাওন লিখছে, “হুমায়ূন বেঁচে থাকলে নাকি এটা পছন্দ করতেন না”!!
হুমায়ূন আহমেদ আজকে বেঁচে থাকলে কি করতেন জানিনা, তবে একটা কাজ যে তিনি করতেন, সেটা আমি নিশ্চিত। এমন নির্লজ্জ দালালির পর শাওন ভুষ্কিকে লাথি দিয়ে বের করে আরেকজন কচি ষোড়শীকে বিয়ে করে ফেলতেন! এইটুকু বিশ্বাস আমার আছে। আমি সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে “লাভ ইউ, হুমায়ূন” লেখা প্লাকার্ড নিয়ে দাঁড়ায় থাকতাম।
উদ্বেগ জানিয়ে শেখ সাদ্দাম হোসাইন লিখেছেন, পরিস্থিতি যে খারাপ এটা টের পান? দুই দিন আগেও আপনি দেয়ালে হাসিনার ছবি আইকা সেখানে জুতা মারতে পারতেন আর এটা ছিল একটা এপ্রেশিয়েবল ঘটনা। কারণ কী? হাসিনা খুনি, গণহত্যাকারী।আজকে পাচ মাস পরে এসে হাসিনার ছবি আকা ডাস্টবিনে ময়লা ফেলা হচ্ছে বলে আনু মুহাম্মদ, ফিরোজ আহমেদ, মেহের আফরোজ শাওন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়রা সমালোচনা করা শুরু করে দিয়েছেন।ওগো বিপ্লবীরা, তোমাগো কি ডরভয় নাই? চারিদিক থেকে ঘিরে ধরছে পুরনো শকুনেরা। তোমরা কি ঘুম থেকে উঠবেনা?
আমিনুল ইসলাম লিখেছেন, যেহেতু হাসিনা এখন জাতীয় খুনি সেহেতু জাতীয় যে কোন বিষয় তাকে (খুনি হাসিনাকে) সম্পৃক্ত করা যেতেই পারে এটা বাংলা একাডেমি হোক আর যে একাডেমিই হোক। আর যারা তার পক্ষে (খুনি হাসিনার) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাফাই গাইতে চাইছে তাদেরকে বলা উচিত খুনি হাসিনার সকল খুনের দায়ভার কি তারা নিতে পারবে? যদি তা না পারে তারা যেন চুপ করে থাকে। এই বাংলার মাটিতে একদিন খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে ইনশাআল্লাহ।
হাবিব আহসান লিখেছেন, এদেশের কিছু হাসিনার দালাল এবং হাসিনার সুবিধাভোগী মানুষ হাসিনাকে অনেক বড় পীর আউলিয়া এবং দরবেশ মনে করে বাকি সমস্ত যা সাধারণ জনগণ শেখ হাসিনাকে মন থেকে ঘৃণা করে। আমি এবং আমার মত সাধারন জনগণ শেখ হাসিনাকে পায়খানা চাইতেও নিকৃষ্ট মনে করে।
রুহুল আমীন লিখেছেন, শফিকুল আলম ভাইকে অভিনন্দন এমন অসাধারণ সাহসিক একটি কাজ করার জন্য।শেখ হাসিনা কোনো সভ্য মানুষ? ওর ক্ষেত্রে ডাস্টবিনে এভাবে ছবি দেওয়া যথেষ্ট সম্মানজনক কাজ।এই খুনী, স্বৈরাচার এর জন্য টয়লেট হচ্ছে উপযুক্ত জায়গা।