দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

আজ ৯ মে, নাৎসিদের বিপক্ষে মানবতার বিজয় দিবস

14

৯ মে, রাশিয়ার ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। দিনটি যা প্রতি বছর পালিত হয় ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে। এই দিনে, ১৯৪৫ সালের রাত ১২টা ৪৩ মিনিটে (মস্কো সময়), নাৎসি জার্মানির নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘গ্রেট প্যাট্রিয়টিক ওয়ার’-এরও এখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যৌথ শক্তি বা অ্যালায়েড ফোর্সের অন্য সদস্যরা ৮ মে বিজয় দিবস পালন করে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভিই ডে পালিত হয়েছে। তবে রাশিয়া দিনটি মূলত ৯ মে পালন করে থাকে।

রুশ ফেডারেশনের ১৯৯৫ সালের আইন অনুযায়ী, দিনটি এখন ‘সামরিক গৌরব ও স্মরণীয় দিন’ হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃত। মস্কোর রেড স্কয়ারে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ, যুদ্ধবিমান প্রদর্শন, আর গোলাবর্ষণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করা হয় দিনটি।

২০২৪ সালের বিজয় দিবসে ৯,০০০ সেনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের বিশেষ ইউনিটসহ অংশ নেয় প্রায় ১,০০০ সৈন্য। এতে ৭৫টি সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধবিমানও অংশ নেয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাণহানি ছিল প্রায় ২৭ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। ধ্বংস হয়েছিল ৭০ হাজারের বেশি গ্রাম ও শহর। এই বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১১,৬৫৭ জন পেয়েছিলেন ‘হিরো অব দ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন’ উপাধি। এদের মধ্যে তিনজনকে এই খেতাব দেওয়া হয় তিনবার এবং দুইজন—জুকভ ও ব্রেজনেভ—চারবার।

বর্তমানে রাশিয়ায় বসবাস করছেন প্রায় ৭,০০০ যুদ্ধ-প্রবীণ। তাদের মধ্যে রয়েছেন রণাঙ্গনের যোদ্ধা, নাৎসি বন্দিশিবির থেকে বেঁচে ফেরা মানুষ এবং অবরুদ্ধ লেনিনগ্রাদ, সেভাস্তোপোল ও স্ট্যালিনগ্রাদের বাসিন্দারা।

বিজয়ের ২০তম বার্ষিকী প্রথম জাঁকজমকভাবে পালন হয় ১৯৬৫ সালে। এরপর ১৯৭৫, ১৯৮৫-সহ বিভিন্ন দশকে বড় আকারের উৎসব আয়োজিত হয়। সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে আধুনিক রাশিয়াও। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, বিজয় দিবস শুধু এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত নয়—এটি এক জাতির আত্মত্যাগ, সম্মান আর বিজয়ের গৌরবময় স্মৃতি। একই সাথে নাৎসিদের ভয়াবহতার হাত থেকে সারা বিশ্বকে মুক্ত করার জন্য পুরো পৃথিবীর এক হয়ে লড়াই করার গৌরব।

Leave A Reply

Your email address will not be published.