অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা করা আগে স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান। আজ, ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত, বিএনপির বর্ধিত সভায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘সংস্কার’ এবং ‘স্থানীয় নির্বাচন’ ইস্যুতে জনগণের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তারেক রহমান জানান, ‘জাতীয় নির্বাচন’ নিয়ে যে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, তা কিছু বক্তব্যের কারণে বিভ্রান্তিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “বিএনপি এবং গণতন্ত্রের পক্ষের সব দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দেয়, কিন্তু এখনো সরকার তাদের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কোনো অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনীতিতে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমাদের দলের কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। বিএনপি সব সময় জনগণের আকাঙ্খা ও সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করেছে এবং করবে।”
বিএনপির ৭ বছরের বিরতির পর আজকের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারেক রহমান বলেন, “৭ বছর আগে ২০১৮ সালে আমাদের শেষ বর্ধিত সভা হয়েছিল, যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তবে ফ্যাসিবাদী শাসনকালে এরপর আর এমন সভা করা সম্ভব হয়নি।”
দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, “তিনি একদলীয় বাকশালের অন্ধকার সময়ে গণতন্ত্রের আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি দলগুলোকে রাজনীতির সুযোগ দিয়েছিলেন এবং বিএনপিকে জনগণের কাছে গণতন্ত্রের পতাকা তুলে দিতে সহায়তা করেছিলেন।”
বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে জয়ের জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে তারেক রহমান বলেন, “আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে সকল ধর্ম, বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার পাবে।”
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “বর্তমান সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সফল হতে পারছে না। এমন অবস্থায় ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত জনগণের কাছে অবান্তর মনে হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র ও জাতীয় ঐক্য রক্ষা করতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সব শ্রেণির মানুষকে একত্রিত হয়ে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
তারেক রহমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, “সরকার যেন ‘স্থানীয় নির্বাচন’ অনুষ্ঠিত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসে এবং সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করে।” তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দলের ঐক্যই আমাদের শক্তি।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, “গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপির লক্ষ্য একটিই— জনগণের স্বার্থে কাজ করা।”
সভায় বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া আমাদের প্রেরণার উৎস, তার নেতৃত্বেই বিএনপি আজ বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল।”
সর্বশেষ, তারেক রহমান বলেন, “আমরা এমন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যা জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।”
