দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

অধ্যাদেশ ছাড়া সড়ক ছাড়বে না সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা

82

সাত সরকারি কলেজকে একীভূত করে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ দ্রুত জারির দাবিতে আজ সোমবার সকাল থেকে শিক্ষাভবনের সামনে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন— ‘অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বেন না।’

সকাল থেকে রাজধানীর শিক্ষাভবন ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সচিবালয়মুখী সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালেই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাস থেকে লং মার্চ করে শিক্ষাভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন।
বেলা ১১টা ২০ মিনিটে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রথমে মিছিল নিয়ে আসে। পরে ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ ও মিরপুর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগ দিলে পুরো এলাকা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন— ‘অধ্যাদেশ নিয়ে টালবাহানা চলবে না’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য চলবে না’।

ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন,
‘সরকার বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, কিন্তু এখনও অধ্যাদেশ জারি করেনি। আজই অধ্যাদেশ দিতে হবে—না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান
রাজধানীর সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে অংশীজনদের মতামত চায়। ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ইমেইল ও সরাসরি মতামত গ্রহণ করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৬ হাজারের বেশি মতামত পাওয়া গেছে, যা এখন সংকলন ও বিশ্লেষণের পর্যায়ে আছে। দ্রুত এ প্রক্রিয়া শেষ করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে ধারাবাহিক পরামর্শ সভা আয়োজন করা হবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা রবিবার সকালে সায়েন্সল্যাব এলাকায় ‘প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা রক্ষা’র দাবিতে সংক্ষিপ্ত মিছিল করে।

এদিকে, সাত কলেজের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকরা প্রস্তাবিত কাঠামোর কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, নতুন ‘স্কুলিং সিস্টেম’ তাদের কর্মপরিকল্পনা ও প্রশাসনিক কাঠামোকে জটিল করবে।

শিক্ষার্থীদের দৃঢ় অবস্থান এবং শিক্ষকদের বিভক্ত মতামতের কারণে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নিয়ে আলোচনায় নতুন উত্তাপ সৃষ্টি হয়েছে। এখন নজর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে—অধ্যাদেশ জারি করে সরকার এই সংকট কত দ্রুত ও কীভাবে সমাধান করে, সেটিই দেখার বিষয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.