দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামি শ্রমনীতির গুরুত্ব কেশবপুর শ্রমিক ফেডারেশনের শ্রমিক সমাবেশ

19

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :যশোরের কেশবপুর শ্রমিক ফেডারেশনের আয়োজনে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে ইসলামী শ্রমনীতির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন আজ সময়ের অপরিহার্য দাবি এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কেশবপুর উপজেলা শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো শ্রমিক সমাবেশ ২০২৫। কেশবপুর পাবলিক ময়দানে আয়োজিত এ মহাসমাবেশে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজারো শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ আব্দুস সালাম। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমেই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। তাদের ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রতিটি দায়িত্বশীল মানুষের কর্তব্য। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসলামী শ্রমনীতি শ্রমিক-মালিক সম্পর্ককে সমতা, ন্যায়বিচার ও মানবিকতার ভিত্তিতে দাঁড় করায় যা বর্তমান শ্রমপরিবেশের সংস্কারে কার্যকর নীতিমালা হিসেবে কাজ করতে পারে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মোঃ মোক্তার আলী, আমীর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেশবপুর এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ইসলাম শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই মজুরি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। আজও যদি সমাজে এই নীতি বাস্তবায়ন করা যেত, তবে শ্রমিকরা বঞ্চনা ও শোষণের শিকার হতো না। শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামী শ্রমনীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ জরুরি।

প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা সভাপতি আব্দুল মালেক খান। তিনি শ্রমিক আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সংগঠনের ঐক্য, সচেতনতা ও নৈতিক অবস্থান যেমন প্রয়োজন, তেমনি শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে ইসলামী ন্যায়নীতির ভিত্তিতে একটি টেকসই শ্রমব্যবস্থা গড়ে তোলা সময়ের দাবি।

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আব্দুস ছামাদ, কর্মপরিষদ সদস্য যশোর জেলা; কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের ক্রীড়া সম্পাদক সাঈদুর রহমান সাঈদ; কেশবপুর উপজেলা নায়েবি আমির মাওলানা রেজাউল ইসলাম; উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাষ্টার রফিকুল ইসলাম এবং সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক তবিবুর রহমান। তারা সবাই শ্রমিকদের অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা, ন্যায্য মজুরি, স্বাস্থ্যসুরক্ষা, এবং শ্রমিক-নেতৃত্বাধীন উন্নয়নদর্শন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

বক্তারা আরো বলেন, শুধু বক্তৃতা বা আন্দোলনে নয়, শ্রমিকদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক শ্রমব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত হলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র সবই উপকৃত হবে।

সমাবেশ শেষে ইসলামী শ্রমনীতির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়। প্রাণবন্ত উপস্থিতি ও উৎসাহ-উদ্দীপনায় শ্রমিক সমাবেশ ২০২৫ এক অনুপ্রেরণাদায়ী ও সফল আয়োজন হিসেবে পরিণত হয়।

Leave A Reply

Your email address will not be published.