দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

যুদ্ধের আঘাতে বিপর্যস্ত ইসরায়েল-ইরানের অর্থনীতি

64

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের টানা সংঘর্ষ শুধু সামরিক নয়, ভয়াবহ অর্থনৈতিক চাপও সৃষ্টি করছে। এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে দুই দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ বড় প্রশ্নের মুখে পড়বে। গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় ইরানের একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কিছু পরমাণু স্থাপনাও। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলের বড় শহর ও সরকারি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

ইসরায়েল এখন ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সময় পার করছে। গাজায় চলমান যুদ্ধের খরচ ৬৭.৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। ইরানের সঙ্গে নতুন সংঘর্ষের প্রথম দুই দিনেই খরচ হয়েছে প্রায় ১.৪৫ বিলিয়ন ডলার। হিসেব অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ৭২৫ মিলিয়ন ডলার খরচ হচ্ছে। প্রতিরক্ষা বাজেটও ২০২৩ সালে ১৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। এদিকে জিডিপির ৪.৯ শতাংশ বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও তা পূরণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

ইরান যুদ্ধের আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞার কবলে। একসময় যেখানে দেশটি দিনে ২.৮ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করত, এখন তা কমে মাত্র ২ লাখে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধের কারণে প্রধান রপ্তানি পয়েন্ট খারগ দ্বীপ থেকেও রপ্তানি স্থবির হয়ে পড়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন আংশিকভাবে বন্ধ। এছাড়া তেল শোধনাগার ও জ্বালানি গুদামেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইরানে মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। দারিদ্র্যের হার প্রায় ২৫ শতাংশ। বেকারত্ব, রিয়ালের দরপতন এবং অবকাঠামোর দুর্বলতাও সংকট বাড়িয়েছে। বাজেটের ৩-৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে খরচ করলেও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ মোকাবিলায় দেশটির মুদ্রা রিজার্ভ যথেষ্ট নয়।

এই যুদ্ধ স্থায়ী হলে, দুই দেশের অর্থনীতি ভয়াবহ মন্দায় নিমজ্জিত হতে পারে। সমাধান যদি কূটনীতিতে না আসে, তাহলে আর্থিক বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী।

Leave A Reply

Your email address will not be published.