দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

বিশ্বের শীর্ষ কৃষি-খাদ্য অগ্রদূতদের তালিকায় বাংলাদেশি উদ্যোক্তা আবদুল আউয়াল মিন্টু

109

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন ২০২৫ সালের জন্য বিশ্বের ২৭টি দেশের ৩৯ জনকে কৃষি ও খাদ্য খাতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে ‘টপ এগ্রি-ফুড পাইওনিয়ার’ হিসেবে পুরস্কৃত করেছে। এই তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান উদ্যোক্তা, রাজনীতিবিদ এবং লাল তীর সিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল মিন্টু।

গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এই সম্মাননা পেয়েছেন। এর আগে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো এই খ্যাতনামা পুরস্কারটি পেয়েছিলেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদ।

গত মঙ্গলবার রাতে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। এই সম্মাননাকে কৃষি ও খাদ্য খাতের ‘নোবেল পুরস্কার’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিজয়ীদের সম্পর্কে ফাউন্ডেশন জানায়, তারা নিজেদের দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বব্যাপী টেকসই ও ন্যায়ভিত্তিক খাদ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাদের বৈচিত্র, প্রতিভা ও দৃঢ় সংকল্প একটি নতুন ভবিষ্যতের পথ দেখাচ্ছে।

আবদুল আউয়াল মিন্টু ১৯৮১ সালে ব্যবসায়িক যাত্রা শুরু করলেও ১৯৯৪ সালে মাত্র ২৫ একর জমির ওপর একটি গবেষণাগার ও খামার গড়ে তোলেন, যার নাম দেন ‘লাল তীর সিডস লিমিটেড’। বর্তমানে এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সপ্তম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থার পর্যবেক্ষণে রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক বীজ পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা আইএসটিএ সনদপ্রাপ্ত। দেশে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান এই স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি।

শুধু উদ্যোক্তা নন, তিনি কৃষি অর্থনীতি ও সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার গবেষণার মধ্য দিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো মহিষের জীবন রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়। গরু মোটাতাজাকরণে উন্নত সীমেনের ব্যবহার এবং সবজি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটানোর পেছনেও রয়েছে তার সরাসরি অবদান। বেসরকারি পর্যায়ে প্রথমবারের মতো দেশে হাইব্রিড বীজের ব্যবহার শুরু করেন তিনিই।

পুরস্কার পাওয়ার পর আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “আমি শুরু থেকেই চেষ্টা করছি কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করতে। উন্নত প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখতে চাই। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এই আন্তর্জাতিক সম্মাননা আমাকে আরও উৎসাহিত করবে নতুন করে সামনে এগিয়ে যেতে।”

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের ডেস মইনসে অনুষ্ঠেয় নরম্যান ই. বোরলাগ আন্তর্জাতিক সংলাপের সময় পুরস্কারপ্রাপ্তদের আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এটি ফাউন্ডেশনের ৩৯তম বার্ষিক উদযাপন হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.