দৈনিক খুলনা
The news is by your side.

বিএনপির বিজয় ঠেকাতে অপপ্রচার-অপকৌশল চলছে: তারেক রহমান

42

ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বিএনপির বিজয় রুখতে চলছে সংগঠিত অপপ্রচার ও অপকৌশল। এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রোববার (২ নভেম্বর) গুলশানের লেকশোর হোটেলে প্রবাসী বিএনপি সদস্যদের জন্য অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, “একসময় বিএনপিকে পরাজিত করতে গিয়ে পতিত ও পলাতক স্বৈরাচার দেশে ফ্যাসিবাদের বীজ বপন করেছিল। গত পনেরো বছর ধরে সেই শাসন ব্যবস্থায় নির্বাচন পদ্ধতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়— এখন ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বিএনপির সম্ভাব্য বিজয় ঠেকাতে নতুন করে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার আর কৌশলগত প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়।”

তারেক রহমান আরও বলেন, “স্বৈরশাসনের সময় জনগণ নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। অথচ এখন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে, মানুষ প্রশ্ন করছে সময়মতো নির্বাচন আদৌ হবে কি না। এমন সংশয়-সন্দেহ গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে জটিল করে তুলতে পারে।”

তিনি জানান, “গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে বিএনপি বরাবরই সর্বোচ্চ রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা দেখিয়েছে। একদিকে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেছি, অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকারকেও যথাসম্ভব সহযোগিতা দিয়েছি। তবু একের পর এক নতুন শর্ত জুড়ে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। এটি উদ্বেগজনক।”

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, “রাজনৈতিক কৌশল আর অপকৌশলের পার্থক্য যদি আমরা না বুঝি, তাহলে কোনো না কোনো অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে আত্মসমর্পণের ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই দেশের সব গণতান্ত্রিক দলকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”

তিনি জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। “দেশের ৩০০ আসনে বিএনপি ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। অনেক আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছেন, তবে বাস্তবতার কারণে সবার মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব নয়,” বলেন তারেক রহমান।

তিনি আরও জানান, “যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির পাশে ছিল, সেই দলগুলোর প্রার্থীদেরও কিছু আসনে সমর্থন দেওয়া হবে।”

এই বাস্তবতা মেনে নিতে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত— এটি সবাইকে মেনে নিতে হবে,” বলেন তিনি।

শিগগিরই ধাপে ধাপে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তারেক রহমান।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমাদের চারপাশে এখনও গোপনে সক্রিয় স্বৈরাচারী শক্তি ওত পেতে আছে। নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করলে তারা সেই সুযোগ নেবে— তাই ঐক্য বজায় রাখাই এখন প্রধান কাজ।”

বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “জনগণের অটুট আস্থা ও গণতন্ত্রকামী মানুষের সমর্থনই বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি। এই বিশ্বাসই যুগের পর যুগ বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছে, জনপ্রিয়তার ধারায় রেখেছে।”

Leave A Reply

Your email address will not be published.