ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষে ইরানকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েছে চীন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-কে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এক আরব কর্মকর্তা। তিনি জানান, বেইজিং ইতিমধ্যেই তেহরানে ‘সারফেস টু এয়ার মিসাইল ব্যাটারি’ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠিয়েছে।
উক্ত আরব কর্মকর্তা আরও বলেন, যুদ্ধের সময় ইরানের বহু প্রতিরক্ষা অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়। এই অবস্থায় যুদ্ধবিরতির পরপরই চীন এই সহায়তা পাঠাতে শুরু করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক আরব কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র আরব দেশগুলোও এই সামরিক সহায়তার বিষয়টি জানে এবং ইরান চীনের সহায়তা পাচ্ছে—এই তথ্য ওয়াশিংটনকেও জানানো হয়েছে।
তবে চীন কতগুলো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করেছে, তা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেননি কোনো পক্ষই। জানা গেছে, এই প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বিনিময়ে তেল দিচ্ছে ইরান। অর্থাৎ আর্থিক লেনদেন না করে সরাসরি পণ্যের বিনিময়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাচ্ছে দেশটি। চীন বর্তমানে ইরানের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের ৯০ শতাংশ তেলই রপ্তানি হয় চীনে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও চীন ইরানের তেল কেনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই নিষেধাজ্ঞা এড়াতে মালয়েশিয়াকে ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে তেলের উৎস লুকানো যায়।
যুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমা দেশগুলো দাবি করেছিল, ইরানের সঙ্গে রাশিয়া ও চীন কিছুটা দূরত্ব বজায় রাখছে। তবে যুদ্ধ থামার পরেই ইরানকে পুনর্গঠনে সক্রিয় সহায়তা দিতে শুরু করেছে চীন। যুদ্ধের শুরুতেই ইসরায়েল ইরানের অনেক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশটির আকাশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। এর ফলে ইরানের সামরিক প্রধান, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের হত্যা করতে সক্ষম হয় ইসরায়েল।
ইরানের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৬ জন ইরানি নাগরিক।